জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সংস্কার প্রস্তাব জমা দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। সেখানে বাংলাদেশ নামের পরিবর্তন নয়, বরং প্রজাতন্ত্র শব্দের বদলে জনকল্যাণ শব্দ প্রস্তাব করা হয়েছে।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও দলীয় মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।
দলের মুখপাত্র বলেন, সংবিধান সংস্কার কমিশন তাদের প্রস্তাবনায় দেশের বিদ্যমান সংবিধানিক নাম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম অংশ পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছে। তারা গণপ্রজাতন্ত্রী শব্দের বদলে জনগণতন্ত্রী অথবা নাগরিকতন্ত্র শব্দের প্রস্তাব করেছে। রাষ্ট্রের সাংবিধানিক নাম পরিবর্তনের এই প্রস্তাবের সঙ্গে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ একমত পোষণ করেছে। তবে জনগণতন্ত্র অথবা নাগরিকতন্ত্রের বদলে জনকল্যাণ বা পিপলস ওয়েলফেয়ার শব্দের প্রস্তাব দিয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এটা কোনোভাবেই বাংলাদেশ নামের পরিবর্তন নয়, বরং রাষ্ট্রের সংবিধানিক নামের ক্ষেত্রে পরিবর্তনের প্রস্তাব। যা এরই মধ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন প্রস্তাব দিয়েছে। ফলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব দিয়েছে মর্মে যেভাবে সংবাদ শিরোনাম করা হয়েছে তা বিভ্রান্তিকর।
মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, রাষ্ট্রের সাংবিধানিক নাম রাষ্ট্রের চরিত্র বহন করে। যেমন সৌদি আরবের সাংবিধানিক নাম কিংডম অব সৌদি আরাবিয়া, বৃটেনের সাংবিধানিক নাম ইউনাইটেড কিংডম অব গ্রেট ব্রিটেন, ভারতের সাংবিধানিক নাম রিপাবলিক অব ইন্ডিয়া, পাকিস্তানের সাংবিধানিক নাম ইসলামিক রিপাবলিক অব পাকিস্তান। এসব সাংবিধানিক নাম দেশগুলোর সাংবিধানিক নীতি ও চরিত্রকে প্রকাশ করে।
বাংলাদেশের সাংবিধানিক নাম পিপলস রিপাবলিক অব বাংলাদেশ। যার বাংলা করা হয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ। এখানে রিপাবলিক বা প্রজাতন্ত্র শব্দ নিয়ে অসন্তুষ্টি ছিল। কারণ এতে করে নাগরিকদের প্রজা সাব্যস্ত করা হচ্ছে। যা নাগরিকদের মর্যাদা ও রাষ্ট্রের সঙ্গে তার সম্পর্ককে হীন করে উপস্থাপন করে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে সংবিধান সংস্কার কমিশন প্রজাতন্ত্রের বদলে জনগণতন্ত্র অথবা নাগরিকতন্ত্র শব্দের প্রস্তাব করেছে।
বিবৃতিতে মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশও প্রজাতন্ত্র শব্দকে সমস্যাজনক মনে করে। তবে এর বিকল্প হিসেবে জনগণতন্ত্র বা নাগরিকতন্ত্র শব্দকে যথার্থ মনে করে না। বরং তার বদলে রাষ্ট্রের যে চূড়ান্ত লক্ষ্য জনকল্যাণ তাকেই রাষ্ট্রের নামের অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য বিকল্প শব্দ প্রস্তাব করেছে। কারণ আমরা মনে করি তন্ত্র কী হবে তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো মানুষের কল্যাণ নিশ্চিত করা। তাই রাষ্ট্রীয় সাংবিধানিক নামের মধ্যেই জনকল্যাণ যুক্ত হলে রাষ্ট্রের চূড়ান্ত লক্ষ্য বাস্তবায়ন সর্বদা সবার মনে জাগ্রত থাকবে।
এতে আরও বলা হয়, ইসলামী আন্দোলন তার প্রস্তাবনায় ভবিতব্য স্বৈরতন্ত্র রোধে দেওয়া প্রস্তাবের সঙ্গে একমত পোষণ করেছে এবং বেশকিছু নতুন ও কার্যকর প্রস্তাব দিয়েছে। সেগুলো নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত। কারণ তাতেই আগামীর বাংলাদেশের পথ সুগম হবে।
আরটিভি/এমএ/এআর