দ্রুততম সময়ের মধ্যে শপথ পাঠ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিলে চলমান আন্দোলনকে আরও বেগবান করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দুপুরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর ভবনে চলমান বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
ইশরাক হোসেন বলেন, মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ হয়েছে। আদালত সিদ্ধান্ত দেওয়ার পরও তারা গড়িমসি করছে। আদালতের নির্দেশনা না মানলে তা হবে অবমাননাকর।
সরকারের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, আপনাদের শেষ সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, আপনারা নিজেদের সংশোধন করেন।
এ সময় প্রশ্ন রেখে এই বিএনপি নেতা বলেন, সরকার একজন মেয়রকে শপথ পড়াতে যেভাবে ব্যর্থ হয়েছে, তারা ভবিষ্যতে নির্বাচিত তিনশ এমপিকে কীভাবে শপথ পড়াবেন?
এর আগে, ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে শপথ গ্রহণ করানো হবে কি না, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি) বলে আদেশ দেন হাইকোর্টের আপিল বেঞ্চ।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ সংক্রান্ত আবেদন নিষ্পত্তি করে এ পর্যবেক্ষণ দেন।
তার আগে, বুধবার (২৮ মে) ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে করা আবেদন খারিজের যে আদেশ হাইকোর্ট দিয়েছিলেন, তার বিরুদ্ধে লিভ টু আপিলের শুনানি হয়। আদালতে ইশরাকের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। রিটকারীর পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ হোসেন।
ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ নিতে না দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে দায়ের করা রিট আবেদন গত ২২ মে হাইকোর্ট সরাসরি খারিজ করে দেন। বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালত বলেন, রিটকারী আইনজীবী মামুনুর রশিদের এ ধরনের রিট করার এখতিয়ার নেই, এই যুক্তিতে আবেদনটি খারিজ করা হয়। তবে, হাইকোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে গত সোমবার আপিল বিভাগে আবেদন করেন রিটকারী আইনজীবী মামুনুর রশিদ। যেখানে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত রাখার অনুরোধ জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ডিএসসিসি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র নির্বাচিত হন এবং ২ ফেব্রুয়ারি ফলাফলের গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। পরে ফলাফলে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে ২০২০ সালের ৩ মার্চ আদালতে মামলা করেন বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেন।
দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে চলতি বছরের ২৭ মার্চ ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে রায় দেন। সেই রায়ের ভিত্তিতে ২৭ এপ্রিল ইসির পক্ষ থেকে গেজেট প্রকাশ করা হয়। তবে হাইকোর্টে রায় ও গেজেটের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করা হলে তা প্রাথমিকভাবে খারিজ হয়ে যায়। সেই আদেশের বিরুদ্ধেই এখন লিভ টু আপিল শুনানি অপেক্ষমান।
আরটিভি/আইএম