ঢাকাশুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

মালয়েশিয়ান মেয়েকে নিয়ে বিপাকে বাংলাদেশি বাবা

আরটিভি নিউজ

রোববার, ১৮ মে ২০২৫ , ১১:৫৮ পিএম


loading/img
মোহাম্মদ আলাউদ্দিন ও তার মেয়ে

মা হারানো মালয়েশিয়ান মেয়েকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন এক প্রবাসী বাংলাদেশি বাবা। মোহাম্মদ আলাউদ্দিন (৩৯) নামের ওই প্রবাসী সম্প্রতি তার স্ত্রীকে হারিয়েছেন। স্ত্রীর মৃত্যুর পর ৭ বছরের অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে বিপাকেই পড়েছেন তিনি। এদিকে ২৭ মে শেষ হতে যাচ্ছে তার ভিসার মেয়াদ। তাই চিন্তার ভাঁজ কপালে।

বিজ্ঞাপন

মালয়েশিয়ার জনপ্রিয় পত্রিকা সিনার হারিয়ানে উঠে এসেছে ওই বাংলাদেশি তরুণের করুণ কাহিনী।

স্ত্রীর মৃত্যু, একমাত্র মেয়ের জটিল রোগ এবং ভিসা জটিলতা দুর্বিষহ করে তুলেছে আলাউদ্দিন নামে ওই বাংলাদেশির জীবন। প্রতিবেদনের তথ্য মতে, ২০১৭ সালে মালয়েশিয়ার নাগরিক নূর শাইল্লাহ রিভাথি আবদুল্লাহকে বিয়ে করেন আলাউদ্দিন। তাদের ঘর আলো করে জন্ম নেয় একমাত্র মেয়ে। মালয়েশিয়ান রীতি অনুযায়ী তার নাম রাখেন সিতি আমিনা মোহাম্মদ আলাউদ্দিন (৭)। মেয়ে সন্তান রেখে সম্প্রতি মারা যান রিভাথি আবদুল্লাহ। মৃত্যুর আগে দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

স্ত্রীর মৃত্যুর পর একমাত্র মেয়ের দেখাশোনার দায়িত্ব পড়ে বাবা আলাউদ্দিনের কাঁধে। যার কারণে তিনি এখন আর কাজে যেতে পারেন না। মেয়ে আমিনা মালয়েশিয়ার নাগরিক হওয়ায় তার নামে সামাজিক কল্যাণ বিভাগ (জেভিএম) থেকে মাসে ৩০০ রিঙ্গিত সহায়তা আসে। সেটা দিয়েই অনেক কষ্টে সংসারের ব্যয় চালিয়ে নিতে হচ্ছে।

আলাউদ্দিন জানান, মেয়ে আমিনারও অনেক শারীরিক সমস্যা রয়েছে। সে জরায়ু ছাড়াই জন্মগ্রহণ করেছে। রয়েছে শ্রবণ সমস্যা। এ ছাড়া তার একটি কিডনিতে সমস্যা এবং ডান হাতে একটু বিকৃতি রয়েছে। এজন্য তার অতিরিক্ত যত্ন নিতে হয়। এর সঙ্গে সম্প্রতি যোগ হয়েছে আরও বড় একটি সমস্যা, যা আলাউদ্দিনের জীবনকে আরও দুর্বিষহ করে তুলেছে।

আলাউদ্দিন বর্তমানে একটি অস্থায়ী ভিজিট পাস (পিএলএস) নিয়ে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন, যার মেয়াদ আগামী ২৭ মে শেষ হবে। এরপর তিনি হয়ে যাবেন অবৈধ।

বিজ্ঞাপন

আলাউদ্দিন জানান, স্ত্রী মালয়েশিয়ার নাগরিক হওয়ায় তিনি আগেই দীর্ঘমেয়াদি ভিসার জন্য আবেদনের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু প্রতারণার শিকার হন। তিনি জানান, ভিসার জন্য এক ব্যক্তির কাছে সাড়ে সাত হাজার রিঙ্গিত দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই ব্যক্তি প্রতারণা করেন। ফলে অর্থের অভাবে তিনি আর নতুন করে ভিসার আবেদন করতে পারেননি। এমন পরিস্থিতিতে চরম অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন আলাউদ্দিন। তার এখন একটাই ভয়, যদি তাকে শেষ পর্যন্ত মালয়েশিয়া ছাড়তে হয়, তাহলে তার ছোট্ট মেয়েটির কী হবে? এখানে তাদের আত্মীয়-স্বজন বলতে তেমন কেউ নেই। স্থানীয় প্রতিবেশী ও কিছু সমাজসেবী অসহায় পরিবারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। তারা আইনি পরামর্শ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় প্রতিবেশীদের পাশাপাশি আলাউদ্দিন মালয়েশিয়া সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, তার পরিস্থিতি বিবেচনা করে যেন ভিসার জটিলতা নিরসন করা হয় এবং মেয়েটিকে বাবার কাছে নিরাপদে থাকার সুযোগ দেওয়া হয়।

একজন প্রতিবেশী বলেন, এই মানুষটি অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। তার ওপর ছোট্ট মেয়েকে নিয়ে এই ভিসা সংকট। এটা সত্যিই হৃদয়বিদারক। আমরা আশা করছি কর্তৃপক্ষ মানবিক দিক বিবেচনা করে দ্রুত এর সমাধান করবে।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |