ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে গাজার লাখো মানুষ বাস্তুহারা হয়ে একদিকে যেমন গাজায় মানবেতর জীবনযাপন করছে, অন্যদিকে অনেকেই পরিবারের সবাইকে হারিয়ে, কেউবা সন্তান হারিয়ে বিভীষিকাময় পরিস্থিতির শিকার হয়ে আশ্রয় নিচ্ছে পার্শ্ববর্তী দেশ মিশরে। দেশটিতে রাফা সীমান্ত পার হয়ে রাজধানী কায়রোসহ বিভিন্ন শহরে আশ্রয় নেওয়া উদ্বাস্তুদের চিকিৎসা, খাবার, শীত বস্ত্র ও নগদ অর্থ দিয়ে সাহায্য করে আসছে বাংলাদেশের বিভিন্ন মানবিক সংস্থা।
এরই ধারাবাহিকতায় এবার কোরবানির ঈদে কায়রো ও আশেপাশের ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের মুখে হাসি ফোটাতে চট্টগ্রাম থেকে কায়রো ছুটে এলেন বাংলাদেশের যুবক আলহাজ শামসুল হক ফাউন্ডেশন (আশ ফাউন্ডেশন)-এর চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মুহাম্মদ নাছির উদ্দিন।
গতকাল (৬ জুন) ঈদের জামাত শেষে দেশটি বুকচিরে বয়ে যাওয়া নীলনদের দ্বীপ জাজিরাতুল মা'দীতে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অন্তত তিনশত মজলুম পরিবারের মাঝে কোরবানির গোশত, ঈদের বিশেষ খাদ্য সামগ্রী, বাচ্চাদের খেলনা, চকলেট ও নগদ অর্থ বিতরণ করেন নাছির উদ্দিন। এ সময় আশ ফাউন্ডেশনের এই মহৎ কর্মসূচিতে স্বেচ্ছায় শ্রম দিয়ে সহযোগিতা করেছেন বিখ্যাত আল-আজহার ও কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত এক দল শিক্ষার্থী। দূরদূরান্ত থেকে আসা গাজার এসব শরণার্থীদের আপ্যায়ন করা হয় বিভিন্ন ফলের নির্যাস ও বিশুদ্ধ পানি দিয়ে।
মিশরে আরটিভি প্রতিনিধিকে আশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নাছির উদ্দিন জানান, সমগ্ৰ মুসলিম উম্মাহর মতো গাজায় এবং মিশরে ফিলিস্তিনি শরণার্থীরা যেন সমানভাবে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারে সে-ই লক্ষে আশ ফাউন্ডেশন গত বছরের ন্যায় এবারও কোরবানি করে তার গোস্ত ও উপহার সামগ্রী গাজাবাসীর মাঝে বিতরণ করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
নাছির উদ্দিন আরও বলেন, দেশ ও বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশিদের অনুদানে তাদের জন্য ৩টি বিশাল উট, ১টি গরু ও ৪টা দুম্বা কোরবানি করে তার গোস্ত, ঈদের খাদ্য সামগ্রী, শিশু ও বাচ্চাদের জন্য খেলনা এবং চকলেট বিতরণে মানুষের দেওয়া আমানত পৌঁছে দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধে যুদ্ধাহত কায়রোর বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে ঘুরে চিকিৎসারত ফিলিস্তিনিদের চিকিৎসার জন্য আর্থিক অনুদান বিতরণ করেছি। এর আগে যুদ্ধাবস্থার প্রথম থেকেই গাজাবাসীর জন্য আশ ফাউন্ডেশন মিশরের রেডক্রিসেন্টের তত্ত্বাবধানে কায়রো থেকে রাফাহ সীমান্ত দিয়ে সরাসরি গাজায় জরুরি খাবার সামগ্রীর পাশাপাশি কাফনের কাপড়, স্যানিটারি ন্যাপকিন পাঠিয়েছে ও গাজায় মসজিদ নির্মাণ, সোলার বিদ্যুৎ, পানির ট্যাংক ও পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থা করে বেশ প্রশংসিত হয়েছে।
আরটিভি/এআর