দৈনন্দিন জীবনে চলার সময় অনেক পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় মানুষকে। যার মধ্যে খুবই পরিচিত একটি বিষয় হলো টাকা ভাঙতি করা। রিক্সা ভাড়া দেওয়ার কিংবা কোনো পণ্য কেনার সময় টাকা ভাঙতি না থাকলে পথের মাঝে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়।
বেশির ভাগ সময়ই কেউ টাকা ভাঙতি দিতে চায় না। এ ছাড়াও টাকা ভাঙতি করার জন্য কিছু কেনার বাহানা করে থাকে অনেকেই। অথচ টাকা ভাঙতি দিলেও যে মহা সওয়াবের ঘোষণা দিয়েছে ইসলাম।
টাকা ভাঙতি দেয়ার বিষয়টি ছোট হলেও এতে অনেক বড় সওয়াব রয়েছে, কারণ এটি মানুষের প্রয়োজন পূরণের একটি অনন্য মাধ্যম।
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, وَتَعَاوَنُواْ عَلَى الْبرِّ وَالتَّقْوَى অর্থ: তোমরা সৎকর্ম ও তাকওয়ার কাজে একে অন্যকে সাহায্য-সহযোগিতা কর। (সুরা মায়েদা, আয়াত: ০২)
এ আয়াতের দাবি হলো, কল্যাণকর ভালো কাজের ক্ষেত্রে যে কোনো মুসলিমকেই সহযোগিতা করতে হবে। ওই মুসলিম ব্যক্তি নিজ দলের অনুসারী কিংবা পছন্দের লোক না হলেও ইসলামের দাবি হলো- কল্যাণমূলক কাজে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তি তার ভালো কাজের জন্য একে অপরকে সহযোগিতা পাবে।
এ ব্যাপারে সালিম (রহ.) থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত একটি হাদিসে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, এক মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই। কাজেই সে তার ওপর নির্যাতন করবে না এবং তাকে অসহায় অবস্থায়ও ছেড়ে যাবে না। যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের প্রয়োজন মেটাবে, আল্লাহ তার প্রয়োজন মেটাবেন।
‘একইভাবে যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের বিপদ দূর করবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিনে তার বিপদ দূর করে দেবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের দোষ গোপন রাখবে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার দোষ গোপন রাখবেন।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৪৮৯৩)
আরেক হাদিসে রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, কোনো মুসলমান ব্যক্তির দোষ-ত্রুটি যে লোক গোপন রাখে, তার দোষ-ত্রুটি আল্লাহ দুনিয়া ও আখিরাতে গোপন রাখেন। যে পর্যন্ত বান্দা তার ভাইকে সাহায্য করতে থাকে সে পর্যন্ত আল্লাহ তাকে সাহায্য করতে থাকেন। (তিরমিজি, হাদিস: ১৪২৫)
যদি একজন টাকা ভাংতি চায় বা অবশ্যই বিপদে পড়ে, তাহলে তার উপকার করা প্রতিটি মুমিনের ঈমানী দায়িত্ব। অন্যের কষ্ট লাঘব ও উপকারে আমাদের এগিয়ে এলে উপর্যুক্ত সওয়াব ও মহান আল্লাহর সাহায্য পাওয়া যাবে।
তাই টাকা ভাংতি দেওয়া একটি সাধারণ কাজ হলেও, কারো প্রয়োজন পূরণ ও অসুবিধা দূর করার মাধ্যমে এটি মহা সওয়াবের কারণ হতে পারে। এটি ইসলামে পরস্পরের প্রতি সহানুভূতির চমৎকার উদাহরণ।
আরটিভি/এসআর