মসজিদে ঘুষি মেরে ইমামকে হত্যার দাবিটি মিথ্যা

আরটিভি নিউজ

সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫ , ১২:৪০ এএম


মসজিদে ঘুষি মেরে ইমামকে হত্যার দাবিটি মিথ্যা
ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত গাউসুল আজম জামে মসজিদে তারাবির নামাজের পর ইমামকে এক মুসল্লি ঘুষি মেরে হত্যা করেছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রচার করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

তবে ফ্যাক্টচেক প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার জানিয়েছে, এ ঘটনার তথ্য সঠিক নয়। প্রতিষ্ঠানটির অনুসন্ধানে জানা যায়, উত্তরার গাউসুল আজম জামে মসজিদে আরেক মুসুল্লির ঘুষিতে ইমামের মারা যাওয়া তথ্যটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে হামলার শিকার ব্যক্তি মারা যাননি। এ ছাড়া তিনি মসজিদটির ইমামও নন।

দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Sami Joy নামের একজন গণমাধ্যমকর্মীর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ৭ মার্চ প্রচারিত একই ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

বিজ্ঞাপন

ভিডিওটির শিরোনামে গাউছুল আজম মসজিদে মারামারির ঘটনার কথা বলা হলেও ওই ঘটনায় কারও মারা যাওয়ার উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

ওই পোস্ট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে একটি জাতীয় দৈনিকের ওয়েবসাইটে গত ১৫ মার্চ উত্তরা ১৩ নং সেক্টর মসজিদের ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি কাটছাঁট করা ও গুজব, মুসল্লি সুস্থ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটি মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মুফতি জুনায়েদ কাসেমীর বরাতে জানানো হয়, অপর মুসুল্লির ঘুষিতে লুটিয়ে পড়া ব্যক্তি পরিপূর্ণ সুস্থ আছেন। 

বিজ্ঞাপন

এ ছাড়া তিনি জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওটি কাটছাঁট করে তৈরি করা হয়েছে। মূল ভিডিওতে ওই ব্যক্তিকে এক মিনিট পরেই উঠতে দেখা যায়।

এ ছাড়া প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, হামলার শিকার ব্যক্তির নাম আনোয়ারুল কিবরিয়া। ওই ব্যক্তির স্ত্রীও প্রতিবেদককে তার সুস্থতার কথা জানান বলে প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়।

পরে এ বিষয়ে জানতে গাউছুল আজম জামে মসজিদের অফিস সহকারী নূরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, হাতাহাতির ঘটনাটি গত ৫ মার্চ ভোরে ঘটে। এ ছাড়া তিনি রিউমর স্ক্যানারকে সেদিনের কয়েকটি সিসিটিভি ফুটেজ সরবরাহ করেন। যেখানে হামলার শিকার ব্যক্তিকে পরে সুস্থ অবস্থায় মসজিদ থেকে হেঁটে বের হতে দেখা যায়।

পাশপাশি পরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আড়ালের চোখ নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ১১ মার্চ একই ঘটনায় মসজিদ কমিটির দেওয়া এক বিবৃতির ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটি থেকে জানা যায়, ওই মসজিদে সাদপন্থীদের বসা নিয়ে আরেক পক্ষের সঙ্গে কয়েক দিন ধরে দ্বন্দ্ব চলমান ছিল। আনোয়ারুল কিবরিয়া সাদপন্থী হওয়ায় তার সঙ্গে হামলাকারীর বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তিনি আনোয়ারুলকে আঘাত করেন। পরে উপস্থিত সবার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান করা হয়।

অর্থাৎ হামলার শিকার ব্যক্তি মসজিদটির ইমাম নন এবং তার মারা যাওয়ার তথ্যটিও সত্য নয়।

সুতরাং উত্তরার গাউসুল আজম জামে মসজিদে তারাবির নামাজের পর ইমামকে ঘুষি মেরে হত্যা করা হয়েছে শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।

আরটিভি/একে

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission