প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে দেশ থেকে। অথচ এসব অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে তেমন কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হচ্ছে না। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কার্যকর ভূমিকা নিলে এ টাকা ফেরত আনা সম্ভব। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন, বিদেশি ব্যাংক ও দূতাবাস সঠিক তথ্য না দেওয়ায় ব্যবস্থা নেওয়া অনেক কঠিন হচ্ছে।
দেশের ঋণখেলাপিদের কাছে আটকে আছে এক লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা। এ বছর জানুয়ারিতে জাতীয় সংসদকে এ তথ্য জানান অর্থমন্ত্রী। খেলাপি প্রতিষ্ঠানসহ তিনশ ব্যবসায়ীর তালিকাও প্রকাশ করা হয়।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পক্ষ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা কর ফাঁকি দেওয়া প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করা হয়। দেশে ঋণ শোধ না-করে ট্যাক্স ফাঁকি দিলেও এসব ব্যবসায়ীরা বিদেশে টাকা পাচার করছেন। বিনিয়োগ করে বিদেশে নাগরিকত্বও নিচ্ছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটি জিএফআই-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্যবসার নামে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর ৭৫৩ কোটি ৩৭ লাখ ডলার পাচার হয়, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬৪ হাজার কোটি টাকা।
সম্প্রতি বিষয়টিকে আমলে নিয়ে অর্থপাচার রোধে বিদেশে নাগরিকত্ব নেওয়া ব্যক্তিদের তালিকা চেয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে দুদক।
দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম বলেন, টাকা একবার পাচার হয়ে গেলে ফেরত আনা কঠিন কাজ। তবে টাকা ফেরত আনা সম্ভব কিছু আইনের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। এমিলিয়ানের মাধ্যমে তথ্য চাওয়া যায় বিদেশের কাছে এবং সে সকল তথ্য দিতে তারা বাধ্য। সে তথ্যগুলো যদি সঠিকভাবে পাওয়া যায় অবশ্যই টাকা ফেরত আনার জন্য যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর, অর্থনীতিবিদ সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাণিজ্যের আড়ালে টাকা পাচার রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও সতর্ক হতে হবে। তথ্য নেওয়ার পর কিন্তু সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন। তাদের ব্যাপারে বিস্তারিত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া এবং তা আইনি প্রক্রিয়া মাধ্যমে করতে হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কূটনৈতিক চ্যানেলে এসব বাংলাদেশিদের তথ্য সংগ্রহ করবে বলে জানালেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
অর্থপাচারের তথ্য চেয়ে যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াসহ ৫০টি দেশকে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্সের অনুরোধ জানিয়েছে দুদক।
জিএম/পি