এলাকায় রাজনীতির পাশাপাশি ঠিকাদারি পেশার ভুয়া লেবাসের আড়ালে ঢাকায় এসে করেন ডাকাতি। পুরান ঢাকায় মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেনকারীদের টার্গেট করে তারা। সুযোগ বুঝে পুলিশ পরিচয়ে উঠিয়ে নিয়ে হাতিয়ে নেয় সর্বস্ব। এলাকায় বাড়ি ও জমিজমা কিনে বিপুল সম্পদেরও মালিক বনে গেছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ডাকাত দলের চার সদস্যকে গ্রেপ্তারে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
রাজধানীর সূত্রাপুরে খাবারের দোকানে ডাকাতির পরিকল্পনা করতে দেখা যায় কয়েকজনকে। টার্গেট ব্যক্তিকে কোথা থেকে উঠিয়ে নেওয়া হবে, সে ছক কষার মুহূর্তে হাজির গোয়েন্দা পুলিশ। ধরার চেষ্টা করলে গুলি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে পালিয়ে যায় তারা।
ব্যবসায়ীদের অস্ত্র ঠেকিয়ে টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার কয়েকটি ঘটনার তদন্তে উঠে আসে সংঘবদ্ধ ডাকাতির মূলহোতা কাউসার ও মাহতাব থাকেন পটুয়াখালীতে। সেখানে এলাকায় রাজনীতির পরিচিত মুখ হলেও ঢাকায় এসে করেন ডাকাতি।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানায়, এখানে ঠিকাদারি করেন তারা। ফাঁকে করেন ডাকাতি। সহযোগীরা পরিকল্পনা করে জানালে তারা পুলিশ পরিচয় গিয়ে সেই গাড়ি থামান। এরপর জিনিসপত্র রেখে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে তা নির্দিষ্ট অনুপাতে ভাগ করা হয়।
টাকা ছিনিয়ে নিয়ে ব্যবসায়ীদের ছেড়ে দেওয়া হয় নির্জন এলাকায়। ডাকাতির টাকা দিয়ে কেনা এলাকায় বাড়ি ও জমিজমাসহ বিপুল অর্থের সন্ধান পেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।
ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান জানান, তারা কোনো নগদ টাকা হাতে রাখে না। তারা স্থানীয় এলাকায় জমি কিনে বাড়ি বানানো, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন জিনিস কিনে টাকাগুলো খরচ করে ফেলে।
অপরাধীদের অপতৎপরতা রোধে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশিদ।
ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশিদ জানান, শুধু ডাকাত দলের সদস্যরাই জড়িত, বিষয়টা তা না। এখানে অনেক সময় বিভিন্ন স্বর্ণ ব্যবসায়ী, ফলবিক্রেতা; বড় বড় প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা, যারা ডাকাত দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ মেইনটেইন করে তারাও জড়িত। অসাধু চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন উপায়ে এসব তথ্য পেয়ে থাকে।
রাজনৈতিক পরিচয়ে অপরাধ করে পার পাওয়ার সুযোগ নেই বলেও জানান তিনি।