আদালতের আদেশের পরও থামছে না অবৈধ ইটভাটা। পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসেবে, দেশের সাত হাজার ৮৮১টি ইটভাটার মধ্যে চার হাজার ৬৩৩টিই অবৈধ। ঢাকা জেলায় অবৈধ ইটভাটা ১১৬টি। ভাটাগুলোর মালিকরা বেপরোয়া। কেটে নিচ্ছে তিন ফসলি জমি থেকে সরকারি প্রকল্পের মাটি। লিখিত অভিযোগ করেও মিলছে না প্রতিকার।
সাভারের কুল্লা ইউনিয়নের গ্রামে জমির ধানেই যেন লেগে আছে ভাটার কালো ধোঁয়া। ধানের চেয়ে যেন চিটার সংখ্যাই বেশি। কৃষকদের অভিযোগ, ইটভাটার কারণে ফলন কমেছে প্রায় অর্ধেক।
ভুক্তভোগীরা জানান, ইটভাটা হওয়ার আগে এখানে বিঘা প্রতি ধান হতো ৩০ থেকে ৩২ মণ। এখন ধান হয় ২০ থেকে ২২ মণ। ভাটার ধোঁয়ায় ফসল কালো হয়ে যায়। সেইসঙ্গে আমাদের ফসলি জমির বিভিন্ন জায়গা থেকে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। তাই সেই জায়গাগুলো আর ফসলের উপযোগী থাকছে না। এর আগে বড় বড় নৌকা এসে এখান থেকে পেঁয়াজ নিয়ে যেত। এখন তো আর পেঁয়াজই হয় না নেবে কোথা থেকে? এমন হলে কৃষকরা আর ফসল করার সাহস পাবে না। এই ভাটা আসলে কৃষকের জন্য ক্ষতিকর।
প্রভাবশালী ভাটা মালিকরা ইচ্ছামতো ক্ষেতের জমি কেটে নেয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই রাতের আঁধারে মাটি কাটা হয়। ছাড় পায়নি সরকারি প্রকল্পও। গ্রামের দেড়শ’ বিঘা জমিতে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের সেচ প্রকল্প থেকেও মাটি কাটার প্রমাণ মেলে। এলাকার একটি ইটভাটার সামনে যার প্রমাণ পাওয়া যায়।
ভাটা মালিকদের বেপরোয়া আচরণের ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করেও পরিত্রাণ পাচ্ছে না কৃষকরা।
ভুক্তভোগীরা জানান, আমাদের ২৫ থেকে ৩০ বিঘা জমি থেকে মাটি কেটে নেয় মাহি ব্রিকসের সোলাইমান। কৃষি জমি ধ্বংস করায় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেছিলাম। কিন্তু এর কোনো প্রতিকার পাইনি। প্রশাসন তাদেরকে সহযোগিতা করে, আমাদেরকে নয়।
পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. জিয়াউল হক বলেন, চিহ্নিত, অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। অভিযোগ করলে তো ব্যবস্থা নেওয়ার কথা। তাদেরকে আবার লিখিত অভিযোগ করতে বলেন। ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর সনাতন ইটের পরিবর্তে কংক্রিট ব্লক ব্যবহারে পরামর্শ পরিবেশ অধিদপ্তরের।