দোকানের মালিক গরু চন্দ্রমণি, শাড়ির ব্যবসা তুঙ্গে
প্রতিদিন সকাল সকাল দোকানে এসে হাজির এই অতিথি! কোনো ঝামেলা ছাড়াই ঘণ্টার পর ঘণ্টা চুপচাপ বসে থাকে। আর তার কারণে দোকানে বাড়ছে ক্রেতার সংখ্যা। ভাবছেন এ আবার কেমন অতিথি? এ অতিথি কোনো মানুষ নয়, একটি গরু। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। তবে ঠিক অতিথি নয়, ক্রেতাদের মতে শাড়ির দোকানের মালিক এই গরু, যার নাম ‘চন্দ্রমণি’।
চন্দ্রমণি, রায়পুরের মহালক্ষ্মী মার্কেটের একটি শাড়ির দোকানের গরু। গত সাত বছর ধরে, এই ১২ বছর বয়সী গরুটি প্রতিদিন দোকানে আসে। ঠিক দুপুর তিনটা থেকে সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে। কখনও আধ ঘণ্টা, কখনও দুই ঘণ্টা। দোকানে প্রবেশ করলেই শুরু হয় চন্দ্রমণির সাদরে অভ্যর্থনা, যেন সে সেখানকার আসল মালিক। আর এভাবেই সে মন জয় করেছে স্থানীয় লোকজন ও অন্যান্য দর্শনার্থীদের। চন্দ্রমণির এই প্রতিদিনের উপস্থিতি দোকানের ব্যবসাকেও ব্যাপক বাড়িয়ে দিচ্ছে।
এই ঘটনাটি ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। লোকজন কৌতূহলী হয়ে আসছেন, কেউ চন্দ্রমণির সঙ্গে সেলফি তুলছেন, কেউ আবার শুধু তাকে দেখতে আসছেন। মজার ব্যাপার, চন্দ্রমণির এই বিশেষ মর্যাদা দোকানের ব্যবসায়ও এনেছে বাড়তি রমরমা!
প্রতিদিন চন্দ্রমণি আসায় দোকানের কর্মচারীরা বলেন, সে আমাদের মালিক, আমরা তাকে বিরক্ত করি না বরং সম্মানের সঙ্গে তাকে গ্রহণ করি।
কিন্তু কেন চন্দ্রমণি পেল এত বিশেষ মর্যাদা? দোকানের মালিক পদম ডাকিলিয়া জানান, আমাদের জন্মের পর মা কয়েক বছর দুধ পান করান, কিন্তু গরু আমাদের জীবনের প্রতিটি দিনেই দুধ দেয়। দুধ, ঘি, দই— সবই তো আসে গরুর কাছ থেকে। এমনকি, যে ফসল আমরা খাই, তা গরুর বিষ্ঠা দিয়ে পবিত্র হয়। চন্দ্রমণির সঙ্গে আমাদের এই সম্পর্ক আধ্যাত্মিক আর ব্যবসায়িক—দুয়ের মিশ্রণ।
চন্দ্রমণির প্রতিদিনের এই আগমন শুধু দোকানের জন্যই নয়, পুরো বাজারের জন্য একটি বিশেষ আকর্ষণ হয়ে উঠেছে। দোকানের মালিক পদম ডাকিলিয়া মনে করেন, এটি আধ্যাত্মিক বিপণনের এক অনন্য উদাহরণ। ক্রেতারাও মজা করে বলেন, চন্দ্রমণি তাদের দোকানের নতুন মালিক! তাই তারাও সাদরে গ্রহণ করেন তাকে। তবে এই ঘটনার মজার দিকের পাশাপাশি রয়েছে আরও এক বার্তা, চন্দ্রমণি যেন সবাইকে শেখাচ্ছে, কীভাবে সহজ-সরল ভালোবাসায় গড়া সম্পর্ক জীবনে আনে সুখ আর শান্তি।
আরটিভি/এফআই-টি
মন্তব্য করুন