টেস্টে দল হিসেবে আফগানিস্তান আত্মপ্রকাশ করে ২০১৮ সালে। কিন্তু বনেদি ফরম্যাটের ‘নবাগত’ এই দলের বিপক্ষেই ২০১৯ সালে প্রথম দেখায় বাজেভাবে হেরে বসে দুই যুগ ধরে টেস্ট খেলে আসা বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে তামিম-মুশফিকরা হেরেছিল ২২৪ রানে। এরপর আর টাইগারদের বিপক্ষে সাদা পোশাকে লড়াই হয়নি আফগানদের।
৪ বছর পর আবারো সাদা পোশাকে লড়বে দুই দল। বুধবার সকালে (১৪ জুন) সিরিজের একমাত্র টেস্টে মাঠে নামতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান। শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সকাল ১০টায় শুরু হবে ম্যাচটি।
সিরিজটি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ নয়। কিন্তু তারপরও আফগানদের নিয়ে বেশ সতর্ক টাইগাররা। কেননা প্রথম দেখায় যেই ক্ষত রাশিদ খান-মোহাম্মদ নাবিরা বাংলাদেশকে দিয়েছেন সেটি খুব সহজে ভোলার না। সেবার আফগানদের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করলেও এবারে আর রণে ভঙ্গ দিতে চায় না স্বাগতিকরা। বেশ সতর্ক থেকেই জয় বাগিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর বাংলাদেশ।
আফগানিস্তান এই সিরিজে তারুণ্যনির্ভর দল বানালেও বাংলাদেশ দল গড়েছে অভিজ্ঞ ও তরুণদের মিশেলে। স্পিনে নিজেদের অন্যতম বড় শক্তি রাশিদ খানকে বাংলাদেশে আনেনি আফগানিস্তান। স্কোয়াডে জায়গা হয়নি তার।
অপরদিকে সিরিজের আগেই আঙুলের ইনজুরি নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে ছিটকে দিয়েছে টেস্ট থেকে। আর ম্যাচের আগের দিন পিঠের ইনজুরির কারণে ছিটকে গেছেন ওপেনার তামিম ইকবাল। এই দুই সিনিয়রের অনুপস্থিতি কিছুটা হলেও ভোগান্তির কারণ হতে পারে বাংলাদেশের জন্য।
যেহেতু তামিম শেষ মুহূর্তে ছিটকে গেছেন, সে কারণে তার পরিবর্তে উদ্বোধনী জুটিতে জাকির হাসানের সঙ্গী হতে পারেন মাহমুদুল হাসান জয়।
বাংলাদেশের বিপক্ষে এই ম্যাচের মধ্য দিয়ে ২ বছর পর টেস্ট ক্রিকেটে ফিরতে যাচ্ছে আফগানিস্তান। সর্বশেষ ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট খেলেছিল মোহাম্মদ নাবির দল। এরপর সাদা পোশাকে আর মাঠে নামা হয় নি তাদের। অপরদিকে বাংলাদেশ সর্বশেষ টেস্ট খেলেছে চলতি বছরের এপ্রিলে, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। সেটি বিবেচনায় জয়ের ক্ষেত্রে বেশ এগিয়েই রয়েছে বাংলাদেশ।
কিন্তু দুই দলের মুখোমুখি পরিসংখ্যান কিন্তু এগিয়ে রাখছে আফগানিস্তানকে। এখন পর্যন্ত কেবল একবার বনেদি ফরম্যাটে লড়েছে দুই দল। সেই ম্যাচে সফরকারী আফগানরা পেয়েছিল ২৩৪ রানের বড় জয়।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ না হলেও দুই দলের লড়াইটা এখন একদিকে যেমন মর্যাদা ধরে রাখার লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে, অপরদিকে সেটি বাংলাদেশের জন্য প্রতিশোধ নেওয়ার মিশনও বলা চলে।
টেস্ট জয়ের ক্ষেত্রে আগামীকাল টস একটি বড় প্রভাবক হিসেবে কাজ করবে। সাধারণত শেরে বাংলার উইকেট স্লো আর লো হলেও ম্যাচের আগের দিন উইকেটে দেখা গেছে ঘাসের উপস্থিতি। যে কারণে স্বভাবতই টসে জিতে বোলিং নেয়া দলই এগিয়ে থাকবেন শেষ হাসি হাসায়।
শেরে বাংলায় খেলা হলে সচরাচর দেখা যায় স্পিনার বেশি নিয়ে একাদশ গড়তে। কিন্তু ঘাসের উইকেট হওয়ায় একাদশে দেখা যেতে পারে পেসারদের আধিক্য। আর টসে জিতে বোলিং নিয়ে প্রথম ঘণ্টার এডভান্টেজ নেওয়ার দিকে চোখ থাকবে দুই দলেরই।
বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণে কাল মেহেদী মিরাজের সঙ্গ দিতে পারেন তাইজুল ইসলাম। আর পেইস ডিপার্টমেন্ট সামলাবেন খালেদ আহমেদ, শরিফুল ইসলাম ও এবাদত হোসেন। তাসকিন আহমেদের খেলা নিয়ে রয়েছে আশঙ্কা। যদি একজন পেসার বেশি খেলায় টিম ম্যানেজমেন্ট, তাহলে অভিষেক হতে পারে মুশফিক হাসানের।
এদিকে রাশিদ খান না থাকায় আফগানিস্তানের চায়নাম্যানের অভাব পূরণ করবেন জাহির খান। তার সঙ্গে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে ইশারুলহক নাভিদ।
বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ: মাহমুদুল জয়, জাকির হাসান, নাজমুল শান্ত, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস, মেহেদি মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, শরিফুল ইসলাম, খালেদ আহমেদ ও এবাদত হোসেন।
আফগানিস্তানের সম্ভাব্য একাদশ: ইব্রাহিম জাদরান, আব্দুল মালিক, রহমত শাহ, হাসমতুল্লাহ শাহেদি, বাহির শাহ, করিম জানাত, আফসার জাজাই, আমির হামজা, ইশারুলহক নাভিদ, ইয়ামিন আহমেদজাই, জাহির খান।