আপামর গ্রাম বাংলার মানুষের প্রাণের খেলা হাডুডু। যা আন্তর্জাতিক মণ্ডলে কাবাডি নামে পরিচিত। এই কাবাডিই বাংলাদেশের জাতীয় খেলা। ১৯৭২ সালে যখন কাবাডিকে জাতীয় খেলার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল, তখন বাংলার কাবাডিয়ানদের দাপট ছিল বিশ্বব্যাপী। তবে কাবাডির সে ঐতিহ্য আজ যেন শুধুই অতীত। বাণিজ্যিকীকরণের এ যুগে ক্রিকেট-ফুটবলসহ আরও অনেক খেলায় যেখানে অর্থের ঝনঝনানি, সেখানে কাবাডি খেলোয়াড়দের নেই ন্যূনতম আর্থিক নিশ্চয়তা। বাস্তবতার কাছে তাই হার মানতে হচ্ছে দেশের জাতীয় এ খেলাকে।
রেইডার আরুদুজ্জামান মুন্সির ভাষ্য, আমাদের খেলোয়াড়রা প্রতিদিন পারিশ্রমিক পান ২০০ টাকা। মাসিক হিসেবে ৬ হাজার টাকা। গ্রাম থেকে আসা একজন প্লেয়ারের এখন ৬ হাজার টাকায় তো চলবে না। যার কারণে সে সুযোগ থাকার পরও আসে না।
আর্থিক বিষয় ছাড়াও কাবাডির পিছিয়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে উঠে এসেছে পর্যাপ্ত খেলা না হওয়ার বিষয়টি। কাবাডি খেলা আয়োজনের একমাত্র সম্বল পল্টনের একটি মাঠ।
কাবাডি ফেডারেশনের টেকনিক্যাল কমিটির চেয়ারম্যান গাজী মোজাম্মেল হক বলছেন, মাঠ সমস্যা সমাধান না হলে দেশের কাবাডিকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব নয়।
তিনি আরও জানান, মাঠ একটা; এই মাঠের মধ্যে ট্রেনিং চলছে, ছেলে-মেয়ে। সিনিয়রদের করালে অন্যদের অনুশীলন হয় না। টুর্নামেন্ট হয় না। একটা মাঠের নির্ভরশীলতা আমাদের অনেক সমস্যায় ভোগাচ্ছে।
ফেডারেশনের দাবি, কাবাডিতে বাংলাদেশকে আবারও সুপার পাওয়ার বানাতে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করছেন তারা।
টেকনিক্যাল কমিটির চেয়ারম্যান যোগ করেন, ‘প্রতিটি জেলায় আমরা যদি একটা কাবাডি ম্যাচ দিতে পারতাম; তাহলে ওই ম্যাচে জেলা সদরে যারা থাকেন, তারা খেললেও কিন্তু অনেক ভালো খেলোয়াড় তৈরি করতে পারতাম। আমাদের খেলোয়াড়দের আমরা একটা বেতন কাঠামোর ভেতরে নিয়ে আসব। বিশেষ টিমে তাদের যুক্ত করার চেষ্টা করছি। মেয়েদের প্রণোদনা দেওয়ার চেষ্টা করছি।’
খেলোয়াড়, কোচ, কর্মকর্তা থেকে শুরু করে কাবাডি সংশ্লিষ্ট সবাই মনে করেন বাংলাদেশের মানুষের এখনও অনেক আগ্রহ কাবাডিকে ঘিরে। সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে এগুতে পারলে খেলাটিকে আবারও বাংলাদেশের জনপ্রিয় করা সম্ভব।