খেলোয়াড়রা ফ্যাশন সচেতন তা সবার জানা। ফুটবল খেলোয়াড় ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো থেকে শুরু করে ক্রিকেটে ভারতের অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ডিয়া ফ্যাশনের জন্য বারবার খবরের শিরোনামে আসেন। এবার আবারও সংবাদের শিরোনামে আসলেন হার্দিক। কিন্তু খেলার জন্য নয় হাত ঘড়ির জন্য আলচনায় আসলেন তিনি।
হার্দিক যখন খেলতে মাঠে নামেন তখন তার হাতে দেখা যায় মহার্ঘ এক ঘড়ি। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি চলাকালীন দুবাইয়ে হার্দিকের হাতে দেখা যায় 'আরএম ২৭-০২ টুরবিলন রাফায়েল নাদাল' মডেলের একটি ঘড়ি।
এই ঘড়ির প্রসঙ্গ আসার আগে জেনে রাখা ভালো যে, ওয়াচ এনথুসিয়াস্ট, রিশা মিল, প্যাটেক ফিলিপ, ওডোমা পিগে, রোলেক্সের মতো ব্র্যান্ডের ঘড়ি হার্দিকের সংগ্রহে রয়েছে। কোটি কোটি টাকার দামের ঘড়ি হাতে দেওয়া হার্দিকের কাছে কোনো ব্যাপার না।হার্দিকের হাতে যে ঘড়িগুলো শোভা পায় সেগুলো সোনা-হিরে-নীলকান্ত মণি দ্বারা খচিত ঘড়ি।
এবার আসা যাক হার্দিকের আরএম ২৭-০২ টুরবিলন রাফায়েল নাদাল ঘড়ির প্রসঙ্গে। আরএম ২৭-০২ টুরবিলন রাফায়েল নাদাল সিরিজটি বিশ্ববন্দিত ঘড়ি নির্মাতা রিশা মিল ২০১৫ সালে ঘড়িটি তৈরি করে। সুইস ঘড়ি নির্মাতা রিশা বিভিন্ন মডেলের ঘড়ি সীমিত সংস্করণ করেই তৈরি করেন। 'আরএম ২৭-০২ টুরবিলন রাফায়েল নাদাল' ঘড়িটি মাত্র ৫০ পিস তৈরি করা হয়। যার একটি রয়েছে হার্দিকের হাতে।
হার্দিক ছাড়াও এই ঘড়ি রয়েছে মুকেশ আম্বানির ছেলে অনন্ত আম্বানির হাতেও। হার্দিকের ঘড়িটির দাম ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৭ থেকে ৮ কোটি রুপি বাংলাদেশের টাকায় যা ৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকার মতো!
এখন প্রশ্ন আসতে পারে এই ঘড়ি কেন এত দামি আর কী এমন বিশেষত্ব আছে এই ঘড়িতে। রিশা মিলের ব্র্যান্ড ভ্যালু আর এই ঘড়ির নির্মাণশৈলী ও উপকরণের জন্যই এই ঘড়ির দাম আকাশচুম্বী। হার্দিকের ঘড়ির মডেলটিরই কথা বলা যাক। কেসব্যান্ড এবং বেসপ্লেট দিয়ে এক সঙ্গে তৈরি করা হয়েছে এই ঘড়ি। গ্রেড ৫ টাইটেনিয়াম দিয়ে বেসপ্লেট তৈরি করা হয়েছে। নীলকান্তমণি স্ফটিকের সঙ্গে কার্বোন ফাইবারের মিশ্রণও দেখা যায়। যার ফলে ঘড়িটিতে দুটি উপাদান আলাদা করে রাখার দরকার হয়নি।
এখন মনে প্রশ্ন জাগতে পারে হার্দিকের ঘড়ির মডেলে কিংবদন্তি টেনিস খেলোয়াড় রাফায়েল নাদালের নাম কেনো? ২০১০ সালে রিশা মিলের সঙ্গে নাদালের প্রথম দেখা হয়। রিশা নিজেই নাদালকে ঘড়ি পরে টেনিস খেলার পরামর্শ দেন। রাফা তখন সেই প্রস্তাব না করে দেন। কারণ স্পেনের রাজপুত্রের মতামত ছিল যে, ভারী ঘড়ি হাতে দিয়ে খেলা সম্ভব নয়। কারণ র্যাকেট দিয়ে ১৪০ থেকে ১৫০ মাইল প্রতি ঘণ্টায় আসা বলের মোকাবিলা করতে হয়।
এরপর রিশা মিল তখন নাদালকে বানিয়ে দেন RM 027 মডেলের একটি ঘড়ি। এই ঘড়ি সেই সময়ে সবচেয়ে হাল্কা ঘড়ি ছিল। পরে নাদালের নামেই সেই ঘড়ি বানান রিশা। এরপর টেনিস থেকে অবসর নেওয়ার আগ পর্যন্ত রিশা মিলের ঘড়িই হাতে দিয়ে খেলেছেন তিনি। বিশ্বে হাতে গোনা কয়েকজন টেনিস খেলোয়াড় আছেন যারা হাতে ঘড়ি দিয়ে কোর্টে নামেন।
রিশা-রাফার যুগলবন্দিতে ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত মোট ১১টি মডেলের ঘড়ি তৈরি হয়েছে। সেগুলি হল-Richard Mille RM 027, Richard Mille RM 035, Richard Mille RM 27-01, Richard Mille RM 35-01, Richard Mille RM 27-02, Richard Mille RM 35-02, Richard Mille RM 27-03, Richard Mille RM 035 Toro Americas Editions, Richard Mille RM 27-04, Richard Mille RM 35-03, RM 27-05 Flying Tourbillon
আরটিভি/এসকে