ঢাকাশুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

এআই ব্যবহার করে সেলফি তুলেই জানা যাবে অসুস্থতার খবর

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক, আরটিভি নিউজ

রোববার, ১৮ মে ২০২৫ , ০২:০৮ পিএম


loading/img

দীর্ঘবছর ধরেই চিকিৎসকরা বিভিন্ন পরীক্ষা করে রোগীর স্বাস্থ্যের খবর জানেন। এবার প্রযুক্তির কল্যাণে এই তালিকায় যুক্ত হলো ‘ফেসএইজ’ নামের একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)। 

বিজ্ঞাপন

যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনে অবস্থিত ম্যাস জেনারেল ব্রিগহ্যামের গবেষকেরা এই প্রযুক্তি তৈরি করেছেন, যা সেলফির মাধ্যমে একজন ব্যক্তির বায়োলজিকাল বয়স নির্ধারণ করতে পারে। গবেষক দলের দাবি, এআই–ভিত্তিক এই টুল চিকিৎসকদের সহায়তা করবে রোগীর স্বাস্থ্যগত অবস্থা বিশ্লেষণ করতে এবং সঠিক চিকিৎসা পরিকল্পনা নিতে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস থেকে জানা যায়, ‘ফেসএইজ’ মূলত একটি ডিপ লার্নিং মডেল, যা মুখের রেখা, চোখের নিচের বলিরেখা, ত্বকের রং ও অন্যান্য চেহারাগত বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে বলে দেয়, কোনো ব্যক্তির শরীরিক বয়স কত হওয়া উচিত। উদাহরণস্বরূপ, একজনের প্রকৃত বয়স যদি ৭০ হয়, তবে তার জীবনধারা, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ও চেহারার গঠন অনুযায়ী ‘ফেসএইজ’ বলে দিতে পারে তার শরীরিক বয়স ৬০—অর্থাৎ তিনি বয়সের তুলনায় সুস্থ ও সবল।

বিজ্ঞাপন

এই প্রযুক্তির অন্যতম নির্মাতা ও গবেষক রেডিয়েশন অনকোলজিস্ট ড. রেমন্ড ম্যাক বলেন, একজন রোগীর চেহারা দেখে প্রায়ই মনে হয় তিনি তার বয়সের তুলনায় অনেকটা তরুণ বা বয়স্ক। ফেসএইজ সেই অনুমানকে পরিমাপযোগ্য ও ব্যবহারযোগ্য করে তুলেছে।

গবেষকেরা তাদের প্রযুক্তি যাচাই করতে প্রায় ৯ হাজার মানুষের ছবি ব্যবহার করেন, যার মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন হলিউড তারকা। উইকিপিডিয়া ও আইএমডিবির মত উন্মুক্ত সূত্র থেকে সংগৃহীত এসব ছবি ছাড়াও তারা একটি ডেটাসেট ব্যবহার করেছেন, যাতে ১ থেকে ১১৬ বছর বয়সী মানুষের ছবি রয়েছে।

ফেসএইজ পরীক্ষামূলকভাবে বিশ্লেষণ করেছে ৬ হাজার ২০০ ক্যানসার রোগীর চেহারা। দেখা গেছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে রোগীর জীববৈজ্ঞানিক বয়স প্রকৃত বয়সের চেয়ে গড়ে পাঁচ বছর বেশি। এমনকি একটি পরীক্ষায় দেখা যায়, শুধুমাত্র ছবি দেখে চিকিৎসকদের ভবিষ্যদ্বাণী সঠিক হওয়ার হার ছিল ৬১ শতাংশ, আর চেহারা ও ক্লিনিক্যাল ডেটা মিলিয়ে তা দাঁড়ায় ৭৩ শতাংশে। কিন্তু ফেসএইজ ব্যবহার করলে সঠিকতা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৮০ শতাংশে। 

বিজ্ঞাপন

গবেষকেরা দাবি করেছেন, ফেসএইজ শুধুমাত্র বয়স বিশ্লেষণে ব্যবহৃত হয়, এটি কোনো শনাক্তকরণ বা নজরদারির কাজে ব্যবহৃত হয় না। অর্থাৎ এই প্রযুক্তিতে কারও পরিচয় চিহ্নিত করা যায় না, ফলে গোপনীয়তা রক্ষার ঝুঁকি তুলনামূলক কম। ফেসএইজ এখনো পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে। আগামী দিনে এটি বড় আকারে পাইলট স্টাডির মধ্য দিয়ে আরও যাচাই-বাছাইয়ের মুখোমুখি হবে। তবে এখনই এটি চিকিৎসকদের কাছে আশার আলো হয়ে উঠেছে।

বিজ্ঞাপন

তবে গবেষকেরা এটাও মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, শুধু চেহারা দেখে সুস্থতা বিচার করা উচিত নয়। কারণ, মানুষ ও তাদের স্বাস্থ্য জটিল ও বহুস্তর বিশ্লেষণের দাবি রাখে। এআই শুধু একটি সহায়ক উপকরণ, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নয়।

আরটিভি/এএ 

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement

Loading...


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |