ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন আগে থেকেই ‘প্রাইমারি ওয়েস্ট কালেকশন সার্ভিস প্রোভাইডার’ বা পিকেএসপিকে দিয়ে বর্জ্য অপসারণ করে আসছিল। সুযোগটি কাজে লাগাচ্ছিল একটি চক্র। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবার সেই বাণিজ্যকেই স্থায়ী রূপ দিতে যাচ্ছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে এক বছরের জন্য আবর্জনা সংগ্রহের কাজ ইজারা দিয়েছে ১২ লাখ টাকায়।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এর ৪৫নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি শেখ মনিরুজ্জামান রবিন আরটিভি নিউজকে বলেন, আমাদের মোট ৩৫টি ময়লার গাড়ি আছে। প্রত্যেকটা গাড়ির জন্য ৩০০টা বাড়ি বরাদ্দ করে দিয়েছি। ঠিকাদাররা লাভসহ তাদের টাকা তুলবেন নগরবাসীর কাছ থেকে। অথচ যারা টাকা দেবেন বিষয়টি তাদের জানানোর মতো সৌজন্য দেখানোর প্রয়োজনও মনে করেনি প্রতিষ্ঠানটি।
এলাকাবাসী বলেন, ওদের মনে হয় নতুন কমিটি দেওয়া হয়েছে। আবার স্লিপে দিয়ে গেছে ২০০ টাকার। তার উপর আবার বঙ্গবন্ধুর ছবি দেওয়া।
প্রত্যেক ওয়ার্ডে পরিবার প্রতি ১০০ টাকা নেয়ার কথা বলা হলেও, ইজারাদাররা তা মানছেন না। যে যেমন পারছেন টাকা আদায় করছেন। ধানমন্ডি, বনানী, গুলশান, উত্তরার মতো এলাকায় টাকার পরিমাণ আরও বেশি। এমনকি বাসা বা ফ্ল্যাট খালি থাকলেও টাকা দাবি করেন বর্জ্য সংগ্রহকারীরা। তাদের আচরণই বলে দেয় কতোটা প্রভাবশালী তারা।
এলাকাবাসী বলেন, বাসা খালি থাকলেও তারা টাকা দাবি করে। এলাকার কমিশনার নাকি তাদের টাকা উঠানোর দায়িত্ব দিয়েছেন।
এমন বিশৃঙ্খলার জন্য সিটি করপোরেশনের ব্যর্থতাকে দায়ী করে নগরবিদ, স্থপতি ইকবাল হাবিব আরটিভি নিউজকে বলেন, মধ্যস্বত্বভোগীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা বা বাণিজ্যের সুবিধা করে দেওয়া সিটি করপোরেশনের কাজ নয়। সিটি করপোরেশনের এই সেবামূলক কার্যক্রমটি কোনোভাবে বাণিজ্যিক কার্যক্রমে পরিণত হোক এটা রাষ্ট্রীয়ভাবে গ্রহণযোগ্য হতেই পারে না। সে কারণেই এই কাজটি খু্বই তাড়াতাড়ি অপসারণ করা হোক।
অভিযোগ স্বীকার করে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলেন নগর কর্তৃপক্ষ।
---------------------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : ফুটপাতে রাত্রিযাপন রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের (ভিডিও)
---------------------------------------------------------------------
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আমরা কিন্তু শুনেছি কোথাও থেকে ১০০ টাকা, কোথাও থেকে ৩০০ নেওয়া হচ্ছে। যারা গুলশান বারিধারা থেকে ময়লা নিচ্ছে তারা আরও বেশি টাকা নিচ্ছে। নীতিমালার বাইরে থেকে কেউ বেশি টাকা নিতে পারবে না।
ডিএনসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাছের বলেন, প্রতিটি বাসা বাড়ি ফ্ল্যাট থেকে ১০০ টাকা, এর বেশি কেউ যদি টাকা নেয়, তাহলে আমরা অনুরোধ করবো বিষয়টা যেন আমাদের জানানো হয়।
নগরবাসীর প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে বর্জ্য অপসারণে সুষ্ঠু পরিকল্পনা না নিলে, সিটি করপোরেশন নাগরিকদের কাছে ন্যূনতম আস্থার জায়গাটাও হারাবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
এস/এমকে