রাজধানীতে ওয়াসার পুকুরে বহুতল ভবন (ভিডিও)
রূপক অর্থে নয় বাস্তবেই পুকুরচুরির ঘটনা ঘটেছে রাজধানীতে। আর দেখেও না দেখার ভান করে এ কাজে সহায়তা করছে খোদ ঢাকা ওয়াসা। কল্যাণপুর ঢাকা ওয়াসার পাম্পিং স্টেশনের ১৭১ একর আয়তনের পুকুর গিলে ফেলেছে ভূমিদস্যুরা। তৈরি করেছে বহুতল ভবন। অথচ পুকুর না থাকায় ওয়াসার নিষ্কাশন পাম্পগুলো চালানো যাচ্ছে না।
কল্যাণপুর স্টর্ম ওয়াটার পাম্পিং স্টেশনের নির্মাণকাজ শেষ হয় ১৯৯৩ সালে। এরপর এখানকার পাম্পগুলোতে পানি সরবরাহ ঠিক রাখতে ও বৃষ্টির পানি খাল থেকে দ্রুত নামাতে পাম্পিং স্টেশনের সামনে ২৫০ একরের একটি পুকুর খননের প্রয়োজনীয়তার কথা জানায় বিশেষজ্ঞ কমিটি। এমওইউ ও ৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে অধিগ্রহণের মাধ্যমে পুকুরের জন্য ১৭১ একর জমির ব্যবস্থা করে ওয়াসা। কিন্তু সেই জমিতে আর পুকুর খনন করেনি সংস্থাটি। বরং ওয়াসার কাছ থেকে চুরি হয়ে গেছে পুকুরটি।
পুকুরের জমির ওপর তৈরি হয়েছে এসব বহুতল ভবন। ভবনে যাতায়াতের জন্য করা হয়েছে রাস্তা। এখানেই থেমে নেই দখলদাররা। পুকুরের জমি আবার ‘আহমেদনগর আবাসিক এলাকা’ নাম দিয়ে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে প্লট আকারে বিক্রি করা হচ্ছে। দিনে-দুপুরে পুকুরচুরির এমন ভয়ংকর অপরাধেও ওয়াসা কর্মকর্তাদের কোনো বিকারই নেই!
স্থানীয়রা জানান, এখানে যারা ক্ষমতা দেখাতে পারে তারাই দখল করতে পারে। এছাড়া সরকারের লোকজন এসব জায়গা দখল করে বিক্রি করে থাকে।
খালগুলো দখল ও পাম্পিং স্টেশনের পুকুরচুরি হওয়ায় ধানমন্ডি, মোহম্মদপুর, মিরপুর, গাবতলীসহ আশপাশের এলাকা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেলেও পানির অভাবে পাম্প চালানো যায় না। আর খালগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় এর পানিও পাম্পিং স্টেশন পর্যন্ত এসে পৌঁছায় না। এ নিয়ে কথা বলতে ওয়াসা ভবনে গেলে ভেতরে ঢুকতে দিলেন না নিরাত্তাকর্মীরা। ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে কথা বললে জানানো হয়, তিনি এসব নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলেন না!
বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম আরটিভি নিউজকে বলেন, যে অভিযোগটি করেছেন তা আমি খতিয়ে দেখবো। যদি অবৈধ কিছু হয়ে থাকে বা নিয়মের বাইরে কিছু হলে তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বেদখল হওয়া জমি উদ্ধার এবং এর সঙ্গে ওয়াসার শীর্ষ কর্মকর্তারা জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখার আহ্বান জনিয়েছেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি আরও বলেন, এসব সম্পত্তি পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে ওয়াসা যদি নীরব থাকে, তাহলে প্রশ্ন উঠবে তিনি ও তার দোসরগণ বেদখল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে লাভবান হয়েছেন কিনা। যারা দখল করেছেন তাদের সুরক্ষা দেওয়ার প্রয়াসে তারা লিপ্ত কিনা তা দেখার বিষয়।
দখলদারদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতেরও দাবি জানিয়েছেন টিআইবির নির্বাহী প্রধান ইফতেখারুজ্জামান।
জিএম/পি
মন্তব্য করুন