ঢাকাসোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩১

কাজের ক্ষেত্রে আপনি কি সন্তুষ্ট?

লাইফস্টাইল ডেস্ক, আরটিভি অনলাইন

শনিবার, ২৫ মার্চ ২০১৭ , ০৪:৫৫ পিএম


loading/img

আমাদের দেশে অনেকেই পড়াশোনা শেষ করে প্রথাগত চাকরির পেছনে দৌঁড়ান। আর অধিকাংশ চাকরিপ্রার্থীরাই ক্যারিয়ার নিয়ে কোনো পছন্দ থাকে না। কোথাও চাকরি হলে তা নিয়ে দিন কাটিয়ে দেয়ার চিন্তা করেন। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তারা অফিসে কাজ করে সন্তুষ্ট থাকেন না। আর সন্তুষ্টি না থাকলে কাজের প্রতি মনও বসে না।

বিজ্ঞাপন

প্রত্যেকের কাজে সন্তুষ্টির জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় থাকে। আর্থিক সুবিধা এর মধ্যে অন্যতম। এছাড়া ম্যানেজারের ভূমিকা, কাজের পরিবেশ, উচ্চ নৈতিকতাসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর একজন কর্মচারির জব স্যাটিসফেকশন বা কর্ম সন্তুষ্টি নির্ভর করে। 

কাজের পরিবেশ : একজন কর্মী সপ্তাহের বেশিরভাগ সময় অফিসে কাজ করে থাকেন। তাই তার জন্য অফিসের কাজের পরিবেশ গুরুত্বপূর্ণ। অফিসে কাজের পরিবেশ এমন হওয়া উচিত যেনো সে কোম্পানির জন্য সর্বোচ্চ কাজ করতে পারে। সেখানে অবশ্যই কাজের জন্য দরকারি জায়গা, রুমে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস থাকতে হবে। যাতে কর্মীরা স্বাচ্ছন্দে কাজ করতে পারেন। পাশাপাশি উন্নত তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করে কাজ করলে কর্মীদের কাজের গতিও বাড়ে।

বিজ্ঞাপন

পদ উন্নতির সুযোগ : চাকরির ক্ষেত্রে একজন কর্মচারির মূল লক্ষ্য থাকে পদ উন্নতি।একজন কর্মী বর্তমান চাকরিতে ভালো করলে প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদে যাবার সুযোগ পেলে তার কর্মস্পৃহা বেড়ে যায়। এতে তার দায়িত্বশীলতা বাড়ে এবং চিন্তা করে ভালোভাবে কাজ করলে উচ্চ প্রতিদান পাবে। অনেক কোম্পানি তাদের কর্মীদের অতিরিক্ত দক্ষতা অর্জনে উৎসাহ দেয় যেনো তার প্রমোশনের সুযোগ বেড়ে যায়। অনেক কোম্পানি প্রায়ই কর্মীদের ইউনিভার্সিটি থেকে কোর্স করার সময় টিউশন ফিও প্রদান করে থাকে। একজন কর্মচারির বার্ষিক পারফরমেন্স মূল্যায়নের ক্ষেত্রে তার কর্মদক্ষতার পাশাপাশি নতুন কাজ শেখাকেও মূল্যায়ন করে থাকে। এসব বিষয়গুলো একজন কর্মচারির কাজের প্রতি আগ্রহ বাড়ায়।

  

কাজের চাপ : কাজের প্রতি আগ্রহী একজন কর্মীর ক্ষেত্রে যদি খুব বেশি কাজের চাপ থাকে এবং ডেডলাইনের মাঝে কাজ শেষ করা অসম্ভব হয়, তাহলে সে কাজ নিয়ে হতাশায় ভোগে। একটি কাজের ডেডলাইন নিয়ে যদি কর্মচারি এবং সুপারভাইজারের মাঝে দ্বন্দ্ব থাকে, তখন অফিসে কর্মপরিবেশ নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হয়। অনেক সময়, এ পরিবেশ ব্যবস্থাপনার অকার্যকারিতা এবং দুর্বল পরিকল্পনাকে নির্দেশ করে থাকে। সুপারভাইজার কর্মীদের কোনো কাজ করার জন্য পর্যাপ্ত সময় না দিলে অফিসে একটি দুরাবস্থার সৃষ্টি হয়। আর এতে সঠিকভাবে কাজটি আদায় করাও সম্ভব হয় না। তাই অফিসের সুষ্ঠ পরিবেশ ধরে রাখতে কর্মীদের ওপর অতিরিক্ত কাজের চাপ দেয়া উচিত নয়।

বিজ্ঞাপন

সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক : কর্মীরা তাদের সহকর্মীদের কাছ থেকে কাজের মূল্যায়ন প্রত্যাশা করে থাকে। একটি ভালো কর্মপরিবেশেও যদি সহকর্মীদের ব্যবহার ভালো না হয়, তাহলে জব স্যাটিসফেকশনে কর্মীরা হতাশায় ভোগে। ২০১১ সালের আগস্ট মাসে FoxBusiness.com. এ প্রকাশিত একটি জরিপে ৫০ শতাংশ কর্মচারি জানান, তারা কাজের ক্ষেত্রে অনেক সময় অসৌজন্যতার সম্মুখীন হয়েছেন। ৫০ শতাংশ বিশ্বাস করেন, এতে তাদের মনোবলে ঘাটতি থাকে। এসব ক্ষেত্রে ম্যানেজারকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। না হয় অফিসে আরো বড় সমস্যার সৃষ্টি হবে। এজন্য কর্মীদের বলে দেয়া উচিত যে সহকর্মীদের সঙ্গে কোন কোন আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়।

বসের সঙ্গে সম্পর্ক : প্রত্যেক কর্মীই চায় তার কাজের স্বীকৃতি এবং প্রশংসা পেতে। এতে কাজের প্রতি আগ্রহ বাড়ে। কর্মীদের জানা দরকার যে তাদের বসের দরজা তাদের জন্য সবসময় উন্মুক্ত। তারা চাইলে যেকোনো দরকারি বিষয়ে আলোচনা করতে পারে। এতে কর্মচারি কোম্পানির চাহিদা অনুসারে কাজ করতে পারে এবং এতে অফিসের প্রতি তার সন্তুষ্টি বাড়ে।

আর্থিক পুরস্কার : কোনো কর্মীর কাজের মূল্যায়ন কোম্পানির বেতন কাঠামোর ওপরও প্রভাব ফেলে। কোম্পানির এমন একটি কৌশল থাকা দরকার যেনো কর্মীদের পারফরমেন্স মূল্যায়ন করা হয় এবং টপ পারফর্মারদের বেতন বাড়ানো হয়। পাশাপাশি বিশেষ সুযোগ-সুবিধা; যেমন- বোনাস, বেশি সময় কাজের জন্য অতিরিক্ত বেতন প্রদান করা, ছুটি বেশি দেয়া যেতে পারে। এটি অফিসে কাজের ক্ষেত্রে কর্মীদের উৎসাহী করে তোলে এবং কাজেও এনে দেয় সন্তুষ্টি। এছাড়া কাজের সন্তুষ্টির জন্য আরো কিছু বিষয় দেখা হয়। যেমন অফিসে সব পর্যায়ের কর্মীদের সমান আচরণ পাওয়া, কর্মচারি এবং ঊর্ধ্বতন ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে বিশ্বস্ত সম্পর্ক থাকা, কাজের নিরাপত্তা, ঊর্ধ্বতন সুপারভাইজারের সঙ্গে সম্পর্ক, কাজে দক্ষতা এবং সামর্থ্য ব্যবহারের যথাযথ সুযোগ থাকা, কর্মীদের আইডিয়ার প্রতি ঊর্দ্ধতন সহকর্মীদের সম্মান, কোম্পানির আর্থিক স্থিতিশীলতা ইত্যাদি।

আরকে/ডিএইচ

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |