যে দুই কথা বলায় নাবিকদের কিছু করেনি জলদস্যুরা

আরটিভি নিউজ

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪ , ১১:৩৪ পিএম


যে দুই কথা বলায় নাবিকদের কিছু করেনি জলদস্যুরা
ছবি : সংগৃহীত

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সোমালিয়ান জলদস্যুদের জিম্মিদশা থেকে মুক্ত বাংলাদেশি ২৩ নাবিক চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছেন। এমভি আবদুল্লাহর এই ২৩ নাবিকের বিষয়ে উৎকণ্ঠায় ছিল সারা দেশের মানুষ। ২৩ নাবিকদের বহন করা লাইটার জাহাজ যখন বন্দরে পৌঁছায় তখন ছিল এক অভাবনীয় দৃশ্য। খুশিতে চোখের নোনা জল মুছছিলেন নাবিকদের মা-বাবা, স্ত্রী-সন্তানরা।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১৪ মে) বিকেলে চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে পৌঁছে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের ক্যাপ্টেন আব্দুর রশিদ।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘জলদস্যুরা যখন আমাদের জিম্মি করেছিল তখন আমি হাত তুলে সারেন্ডার করে বলেছিলাম, আমরা বাংলাদেশি মুসলিম, আমরা রোজা আছি। এসব কথা বলায় তারা আর কিছু করেনি।’

আব্দুর রশিদ বলেন, ‘প্রথম দিন যখন আমরা দস্যু দ্বারা আক্রান্ত হলাম, তখন সেকেন্ড অফিসার ব্রিজে ছিলেন। আমি নিচে নেমে অ্যালার্ট দিচ্ছিলাম। সবকিছু অতি দ্রুত ঘটছে। দস্যুরা স্পিডবোটে এসে জাহাজে ওঠে ব্রিজে চলে আসে। আমি আর সেকেন্ড অফিসার আমাদের হিডেন রুমে যেতে পারিনি। সেকেন্ড অফিসার আটক হওয়ার পর আমি গিয়ে দেখি একে-৪৭ তাক করে আছে তার দিকে। আমি যেতেই আমার দিকেও একে-৪৭ তাক করে।’ 

তিনি বলেন, ‘আমাদের নাবিকদের কেউ কেউ কান্নাকাটি করেছিল। আমিও জীবনে প্রথম এমন পরিস্থিতিতে পড়েছিলাম। মনে ভয় ছিল, কিন্তু বডি ল্যাঙ্গুয়েজ স্বাভাবিক রেখেছি। সবাইকে হ্যান্ডেল করে, যেন আমাদের কোনো ক্রুর কোনো ক্ষতি না হয় সেদিকে নজর রেখেছি। সেফটি অব লাইফটাকে প্রাধান্য দিয়েছি।’

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, ৩৩ দিনের মাথায় ১৩ এপ্রিল দিবাগত রাতে জাহাজটি মুক্ত হয়। এরপর জাহাজটি প্রথমে আমিরাতের আল-হামরিয়া বন্দরে পৌঁছায়। সেখানে পণ্য খালাস শেষে আরেকটি বন্দর থেকে চুনাপাথর বোঝাই করে চট্টগ্রামের পথে রওনা হয়েছিল জাহাজটি। এ হিসেবে আমিরাত থেকে ১৩ দিনের মাথায় জাহাজটি বাংলাদেশের জলসীমায় এসে পৌঁছাল।

কেএসআরএম গ্রুপ জানায়, এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে ৫৬ হাজার টন পণ্য চুনাপাথর রয়েছে। এতে প্রায় ১৯০ মিটার লম্বা জাহাজটির ড্রাফট (জাহাজের পানির নিচের অংশের গভীরতার পরিমাপ) বেড়ে হয়েছে সাড়ে ১২ মিটার। জাহাজটির ড্রাফট বেশি থাকায় কুতুবদিয়ায় প্রথমে কিছু পরিমাণ পণ্য খালাস করে। এরপর পতেঙ্গার কাছাকাছি বঙ্গোপসাগরে বন্দর জলসীমায় আনা হয়। সেখানে বাকি পণ্য খালাস করা হবে। এ জন্য দেশে পৌঁছার পরও নাবিকদের ঘরে ফিরতে একটু সময় লেগেছে।

২০১০ সালের ডিসেম্বরে আরব সাগরে সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল বাংলাদেশি জাহাজ জাহান মণি। ওই সময় জাহাজের ২৫ নাবিক এবং প্রধান প্রকৌশলীর স্ত্রীকে জিম্মি করা হয়। নানাভাবে চেষ্টার পর ১০০ দিনের চেষ্টায় জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্তি পান তারা।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission