শেষ হচ্ছে বাবরের ১৭ বছরের বন্দিজীবন
বহুল আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার সাজা থেকে খালাস পেয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। এর আগে, একই ঘটনায় চোরাচালান মামলায় খালাস পেয়েছিলেন তিনি। এর ফলে, লুৎফুজ্জামান বাবরের মুক্তিতে আর কোনো বাধা নেই।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আসামিদের করা আপিলের ওপর শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
প্রায় ১৭ বছর ধরে কারাগারে রয়েছেন তিনি। এর মধ্যে কয়েকবার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাও নিয়েছেন।জনমনে প্রশ্ন—কখন কারামুক্ত হচ্ছেন লুৎফুজ্জামান বাবর?
কারামুক্তির বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার বলেন, কারামুক্তির কাগজপত্র একটার পর একটা পাচ্ছি। তবে সবগুলো এখনও এসে পৌঁছায়নি। আজ পৌঁছালে আজই মুক্তি পাবেন তিনি।
এদিন অস্ত্র আইনের মামলায় বাবার ছাড়াও খালাস পান আরও আটজন। আর উলফা নেতা পরেশ বড়ুয়াসহ ৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
আদালতে বাবরের পক্ষে আইনজীবী শিশির মনির খালাস চেয়ে এ আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসিফ ইমরান জিসান। অন্য পাঁচজন আসামির পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান।
গত ১৮ ডিসেম্বর বহুল আলোচিত চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনায় করা মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, মহসিন তালুকদার, এনামুল হক, রাজ্জাকুল হায়দারসহ ছয় আসামিকে খালাস দেন হাইকোর্ট।
এর আগে, গত ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনায় করা মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়। সেদিন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ কয়েকজন আসামিপক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান।
প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল চট্টগ্রামের সিইউএফএল ঘাট থেকে আটক করা হয় ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান। এ নিয়ে বন্দরনগরীর কর্ণফুলী থানায় অস্ত্র আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে চোরাচালানের অভিযোগ এনে দুটি মামলা করা হয়।
মামলায় ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত এবং বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ রায় দেন। এর মধ্যে অস্ত্র চোরাচালান মামলায় সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়া এবং দুটি গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ১৪ জনকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়। অস্ত্র আইনে করা অন্য মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ হয় একই আসামিদের।
আরটিভি/একে-টি
মন্তব্য করুন