ঢাকাবুধবার, ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ২৬ চৈত্র ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্তে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই : খলিলুর রহমান 

আরটিভি নিউজ

শনিবার, ০৫ এপ্রিল ২০২৫ , ০৯:৩৮ পিএম


loading/img
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্তে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাই-রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (৫ এপ্রিল) রাত সোয়া ৯ টার দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার ডাকা জরুরি সভা শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি। এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শুরু হওয়া সভাটিতে সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টাদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞ এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

ড. খলিলুর রহমান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বৃদ্ধির বিষয়টি আকস্মিক নয়, এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করেই নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বিজ্ঞাপন

একই ব্রিফিংয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সর্বস্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে, আরও হবে। বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। এই মুহূর্তে তিনি আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ এবং তার আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে সংকট সমাধান করা হবে।  

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমদানি বৃদ্ধির মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘাটতি কমানোর প্রচেষ্টা করা হবে। দেশের তৈরি পোশাক খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে না বরং নতুন সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। 

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের রফতানি প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোতেও শুল্ক বেড়েছে, তাই যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্ক নীতিতে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। বরং, বাংলাদেশের তৈরি পোশাকে বৈচিত্র্য থাকায় সম্ভাবনার দুয়ার খুলবে।

প্রসঙ্গত, নতুন করে বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। দেশের প্রধান রপ্তানি খাত পোশাকশিল্পের জন্য বড় এক ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে এটিকে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম অবশ্য বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকার এমন কিছু করবে, যার ফলে বর্তমানে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে যে পরিমাণ রপ্তানি করে, তার চেয়ে বাড়বে। 

বর্তমান সরকার খুবই ব্যবসাবান্ধব, খুবই রপ্তানিবান্ধব উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি এটা বলে দিতে পারি যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানি কমবে না, বরং আরও বাড়বে। যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত নতুন শুল্কহার নিয়ে আলোচনা করতে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এ বিষয়ে আমাদের রেসপন্স কী হবে, আমরা মার্কিন প্রশাসনকে কী লিখব, এ নিয়ে বৈঠকে আলোচনা করা হবে। 

এর আগে, ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় বুধবার (২ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় (বাংলাদেশ সময় বুধবার দিনগত রাত ২টা) হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ঘোষণা অনুযায়ী, এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে চীনের রপ্তানি পণ্যে ৩৪ শতাংশ, ভিয়েতনামের রপ্তানি পণ্যে ৪৬ শতাংশ, তাইওয়ানের রপ্তানি পণ্যে ৩২ শতাংশ, জাপানের রপ্তানি পণ্যে ২৪ শতাংশ, ভারতের রপ্তানি পণ্যে ২৬ শতাংশ, দক্ষিণ কোরিয়ার রপ্তানি পণ্যে ২৫ শতাংশ, থাইল্যান্ডের রপ্তানি পণ্যে ৩৬ শতাংশ, মালয়েশিয়ার রপ্তানি পণ্যে ২৪ শতাংশ, কম্বোডিয়ার রপ্তানি পণ্যে ৪৯ শতাংশ, বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যে ৩৭ শতাংশ, সিঙ্গাপুরের রপ্তানি পণ্যে ১০ শতাংশ, ফিলিপাইনের রপ্তানি পণ্যে ১৭ শতাংশ, পাকিস্তানের রপ্তানি পণ্যে ২৯ শতাংশ, শ্রীলঙ্কার রপ্তানি পণ্যে ৪৪ শতাংশ, মিয়ানমারের রপ্তানি পণ্যে ৪৪ শতাংশ এবং লাওসের রপ্তানি পণ্যে ৪৮ শতাংশ শুল্ক আরোপ হতে যাচ্ছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যেসব দেশের পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, তা কার্যকর করা হবে আগামী ৫ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে। আর যেসব দেশের পণ্যের ওপর ১০ শতাংশের বেশি শুল্ক ঘোষণা করা হয়েছে, তা কার্যকর হবে আগামী ৯ এপ্রিল মার্কিন স্থানীয় সময় রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে।

আরটিভি/এসএইচএম

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |