বাসা ফাঁকা থাকলেই বান্ধবীদের এনে উল্লাস করতো দিহান
মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থী আনুশকা নূর আমিনের ধর্ষণ ও হত্যা মামলার প্রধান আসামি ফারদিন ইফতেখার দিহানের বাসা রাজধানীর কলাবাগানের লেক সার্কাস এলাকায়। দিহানের বাবা সদ্য অবসরপ্রাপ্ত জেলা রেজিস্ট্রার আবদুর রউফ সরকার। তিন সন্তানের মধ্যে দিহান সবার ছোট। পরিবারের একটু বেশি আদুর পেতেন দিহান। তাই তো বাসা ফাঁকা থাকলেই বন্ধু-বান্ধবীদের নিয়ে আসতেন দিহান। তার বিরুদ্ধে এর আগেও বিভিন্ন মেয়েদের সঙ্গে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
কলাবাগানে দিহানের বাসার কেয়ারটেকার মোতালেব শনিবার (০৯ জানুয়ারি) এমন তথ্য জানান। তবে তিনি বলেন, বাসা ফাঁকা থাকলে মাঝে মাঝে দিহান বন্ধু-বান্ধবীদের নিয়ে বাসায় আসলেও হত্যা বা ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটতে পারে তা তিনি ধারণাও করতে পারেননি। আনুশকা নূর আমিন যেদিন হত্যার শিকার হয় সেদিন মোতালেবের পরিবর্তে কেয়ারটেকার দুলাল দায়িত্ব পালন করছিলেন। দুলাল এখন পলাতক আছেন বলে জানান মোতালেব।
আনুশকার ধর্ষণ ও হত্যা মামলার প্রধান আসামি দিহানের বড় ভাই সুপ্তর বিরুদ্ধেও স্ত্রী হত্যার অভিযোগ রয়েছে। বিপুল অর্থসম্পদের মালিক দিহানের বাবা অবসরপ্রাপ্ত জেলা রেজিস্ট্রার আবদুর রউফ সরকারের ঢাকা ও রাজশাহীতে একাধিক বাড়ি ও ফ্ল্যাট। আবদুর রউফ তিনি তার বড় ছেলে সুপ্তসহ রাজশাহীতে থাকেন। মেঝ ছেলে ও ছোট ছেলে দিহানসহ তার মা থাকেন কলাবাগানের বাসায়।
এর আগে, ওই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় দিহানকে একমাত্র আসামি করে কলাবাগান থানায় মামলা করেন নিহতের বাবা আলামিন। এ ঘটনায় হাসপাতাল থেকে দিহানসহ তিন বন্ধুকে আটক করে পুলিশ। দিহানের তিন বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদের পর আজ শনিবার (৯ জানুয়ারি) মুচলেকা নিয়ে পরিবারের জিম্মায় দিয়েছে পুলিশ। ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় তাদের কোনো সম্পৃক্ততা না থাকায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির কলাবাগান জোনের এডিসি এহসানুল ফেরদৌস।
কলাবাগান থানার পুলিশ পরিদর্শক আ ফ ম আসাদুজ্জামান বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাতে তানভীর ইফতেফার দিহানকে (১৮) আসামি করে ছাত্রীর বাবা ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে মামলা করেছেন। মামলাটির তদন্ত চলছে। এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে ধানমন্ডির আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কলাবাগান থানায় ফোন করে জানায়, এক কিশোরীকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় এনেছেন এক তরুণ। কিশোরীর শরীর থেকে রক্ত ঝরছে। খবর পেয়ে নিউমার্কেট অঞ্চল পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার (এসি) আবুল হাসান ওই তরুণকে আটকে রাখার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন। এরপর কলাবাগান থানার পুলিশ দ্রুত হাসপাতালে গিয়ে ওই তরুণকে আটক করেছিল।
এফএ
মন্তব্য করুন