বর্তমানে ব্যক্তি পর্যায়ে বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকা, যা আরও বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য সংস্থাটি আরও ৫০ হাজার টাকা বাড়িয়ে চার লাখে উন্নীতর কথা বলেছে সিপিডি।
রোববার (১৬ মার্চ) ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন এ প্রস্তাব করেন।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখী ছিল। খাদ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতির তুলনায় খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার বেশি। এ ছাড়া, শহরের চেয়ে গ্রামে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার অনেক বেশি। সাধারণ মানুষ সঞ্চয় ভেঙে খাচ্ছে।
তিনি বলেন, এ পরিস্থিতিতে করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো যৌক্তিক বলে আমরা মনে করি। আগামী অর্থবছর এটি বাড়িয়ে ৪ লাখ টাকা নির্ধারণ করা উচিত।
বর্তমান ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের আয়ের প্রথম সাড়ে তিন লাখ টাকার ওপর কর নেই। পরের প্রথম এক লাখ টাকার জন্য ৫ শতাংশ, পরবর্তী ৪ লাখ টাকার জন্য ১০ শতাংশ, পরবর্তী ৫ লাখ টাকার জন্য ১৫ শতাংশ, পরবর্তী ৫ লাখ টাকার জন্য ২০ শতাংশ এবং বাকি অর্থের ওপর ২৫ শতাংশ হারে কর বসে।
এ ছাড়া মহিলা করদাতা এবং ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য করমুক্ত আয়সীমা হলো চার লাখ টাকা। তৃতীয় লিঙ্গের করদাতা এবং প্রতিবন্ধী স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতার করমুক্ত আয়সীমা হবে পৌনে পাঁচ লাখ টাকা। গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা করদাতার করমুক্ত আয়ের সীমা পাঁচ লাখ টাকা। আর প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পিতামাতা বা আইনানুগ অভিভাবকের প্রত্যেক সন্তান বা পোষ্যর জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা আরও ৫০ হাজার টাকা বেশি হবে।
এ ছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি এবং চট্টগ্রাম সিটির এলাকায় অবস্থিত করদাতার জন্য ন্যূনতম কর ৫ হাজার টাকা, অন্য সিটির করদাতার জন্য ৪ হাজার টাকা এবং সিটি করপোরেশন ব্যতীত অন্য এলাকার করদাতার জন্য ৩ হাজার টাকা দিতে হবে।
এদিকে, চলতি অর্থবছর শেষে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ ১ লাখ ৫ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়াবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সিপিডি।
ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘চলতি অর্থবছর (২০২৪-২৫) এর জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে মোট রাজস্ব সংগ্রহে মাত্র ৪ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। বার্ষিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৩২ দশমিক ২ শতাংশ অর্জন করতে হলে বাকি সময়ে রাজস্ব আহরণে ৫৫ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি প্রয়োজন, যা আসলে অসম্ভব বলেই মনে হচ্ছে।’
আরটিভি/এএইচ-টি