ঢাকার সায়েন্সল্যাব এলাকায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে নিহত দুই যুবকের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তার নাম মো. শাহজাহান (২৫)। তিনি নিউমার্কেট এলাকার হকার ছিলেন।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করেন তার মা ও মামা।
শাহজাহানের মা আয়েশা বেগম ও মামা মোসলেম উদ্দিন জানান, শাহজাহানের বাড়ি কেরানীগঞ্জের মীরেরবাগ পোস্তগোলা এলাকায়। তার বাবার নাম মহসিন (মৃত) । তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে শাহজাহান ছিলেন তৃতীয়। তিনি স্ত্রীকে নিয়ে কামরাঙ্গীরচরের চান মসজিদ এলাকায় থাকতেন। শাহজাহান নিউমার্কেট এলাকার বলাকা সিনেমা হলের সামনে পাপোশ বিক্রি করতেন।
এর আগে, মঙ্গলবার দুপুর থেকে সায়েন্সল্যাব এলাকায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। তাদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। রাত ৮টা পর্যন্ত চলে সংঘর্ষ।
সংঘর্ষের এক পর্যায়ে শাহজাহানকে আহত অবস্থায় সিটি কলেজের সামনের রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেন পথচারীরা। পরে উদ্ধার করে তাকে পপুলার মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সেখান থেকে সন্ধ্যার পর ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শাহজাহানকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কাস্টমার কেয়ারে দায়িত্বরত মো. হৃদয় বলেন, কয়েকজন ছেলে সন্ধ্যার দিকে গুরুতর আহত অবস্থায় শাহজাহানকে নিয়ে আসেন। তখন তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স ডেকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ওই যুবকের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ছেলেটিকে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক অবরোধ শুরু করেন। এর ফলে রাজধানী অচল হয়ে পড়ে। একই সঙ্গে রংপুর, রাজশাহী, বগুড়া চট্টগ্রামসহ দেশের প্রায় সর্বত্র শিক্ষার্থীরা সড়কে নেমে আসেন। শেষ খবর পর্যন্ত ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং রংপুরে ছাত্রলীগ ও পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে ছয়জন নিহত হয়েছেন।
