কোটা সংস্কার আন্দোলনের জেরে কয়েক দিনের টানা সংঘর্ষ এবং কারফিউতে স্থবির হয়ে পড়েছে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশ। ঝরেছে বহু প্রাণ, যার সঠিক সংখ্যা জানা নেই। আহত হয়েছে হাজারে হাজার। চলমান পরিস্থিতিতে টানা তিন দিনের সাধারণ ছুটির পর আজ চালু হয়েছে সরকারি-বেসরকারি সব অফিস। এদিন অফিস চলবে বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। অফিস শুরুর দিনে সকাল থেকে ঢাকার সড়কে গণপরিবহন দেখা গেছে। রাস্তায় বের হলেই চোখে পড়ছে অফিসগামী মানুষের চলাচল।
বুধবার (২৪ জুলাই) সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ১১টা পর্যন্ত রাজধানীর বাড্ডা, রামপুরা, নতুনবাজার, নদ্দা, বসুন্ধরা ও গুলশান এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। এ ছাড়া সকাল থেকেই রাজধানীর মিরপুর, আগারগাঁও, ফার্মগেট, কাওরান বাজার, শাহবাগ, পল্টন ও উত্তরা এলাকায় গণপরিবহন চলাচলের খবর পাওয়া গেছে। তবে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় সড়কে গণপরিবহনের সংখ্যা অনেকটাই কম।
মহাখালী বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই ঢাকা-ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইলসহ উত্তরবঙ্গগামী রুটের দূরপাল্লার বাস চলাচল শুরু হয়েছে। অন্য টার্মিনালগুলো থেকেও দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যাচ্ছে বাস।
এদিকে অফিসগামী মানুষ হাতে একটু সময় নিয়েই আজ রাস্তায় বের হচ্ছেন। রাস্তায় গণপরিবহন ও মানুষের চলাচল বাড়ায় সবার মধ্যেই স্বস্তি বিরাজ করছে।
রাজধানীর শনির আখড়া থেকে অফিসের উদ্দেশে মঞ্জিল পরিবহনে ওঠেন আয়মান আদিব। তিনি বলেন, অফিস তো ১১টায় শুরু। ভাবলাম রাস্তায় বাস পাব কি না, সেজন্য দুই ঘণ্টা আগেই বাসা থেকে বেরিয়েছি। রাস্তায় আসতেই বাস পেয়ে গেছি। কিছুটা ভয় কাজ করলেও গণপরিবহন চলায় খুশি তিনি।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে গত ১৯ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা থেকে সারাদেশে কারফিউ জারি করে সরকার। বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য মোতায়েন করা সেনাবাহিনী। একই সঙ্গে জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিতে গত রবি, সোম ও মঙ্গলবার (২১, ২২ ও ২৩ জুলাই) সারাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়।
পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় ধীরে ধীরে কারফিউ শিথিলের সময়সীমা বাড়ানো হয়। সবশেষ বুধবার ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী জেলায় কারফিউ জারি রয়েছে। তবে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এসব জেলায়ও কারফিউ শিথিল থাকবে। তাছাড়া এদিন বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত সব অফিস, ব্যাংক, আদালত চলবে।