ভাই-বন্ধুসহ নারী সাংবাদিককে মারধর ও শ্লীলতাহানি

আরটিভি নিউজ

বৃহস্পতিবার, ০৩ এপ্রিল ২০২৫ , ০২:৫৭ এএম


ভাই-বন্ধুসহ নারী সাংবাদিককে মারধর ও শ্লীলতাহানি
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর বনশ্রীতে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় দৈনিক নিউ এজের সাংবাদিক রাফিয়া তামান্নার শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে। পরে এ ঘটনায় প্রতিবাদ করায় ছোট ভাই ও বন্ধুসহ ওই তরুণীকে মারধর করা হয়। এ সময় ধর্ষণের হুমকিও দেওয়া হয়। 

বিজ্ঞাপন

বুধবার (২ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৭টা থেকে রাত ৮টার মধ্যে বনশ্রী এফ ব্লকের ৩নং সড়কে এ ঘটনা ঘটে বলে দাবি করেছেন তিনি। তারা আহত হয়ে তিনজনই ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। পরে রাতেই রামপুরা থানায় একটি মামলা (মামলা নং ১) দায়ের করেন তরুণী। 

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, বুধবার (২ এপ্রিল) রাত আনুমানিক সাড়ে ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে রামপুরার বনশ্রী ই-ব্লক ৩নং রোডের শেষ মাথার জুস দোকানের ভেতরে ছিলেন ওই ভুক্তভোগী তরুণী। সেসময় অজ্ঞাতনামা এক লোক বারবার আমার দিকে তাকাচ্ছিল দেখে আমি তার নিকট জানতে চাই আমাকে চেনে কি না? কেন তাকাচ্ছেন বারবার। এ কথা শুনে উনি উত্তেজিত হয়ে চিল্লাচিল্লি শুরু করেন। এ কারণে আমি ও আমার ছোট ভাই ও বন্ধু দোকান থেকে বের হয়ে আসি।

বিজ্ঞাপন

বের হওয়ার পর ওই দোকানে অজ্ঞাতনামা দুজন প্রবেশ করে। খুব সম্ভবত ওই লোকের কাছ থেকেই তাকানোর বিষয়টি শুনে তারা আমার দিকে তাকালে কী হবে বলে টিজ করতে করতে দোকান থেকে বের হয়ে বিবাদী জিশানসহ অজ্ঞাতনামা দুজন আমার পথরোধ করে। এটা দেখে আমার ছোটভাই তাদের সামনে এসে দাঁড়ায়। তখন তারা আমার ভাইকে থ্রেট দেওয়া শুরু করে এবং বলে যে, ‘বাসা কই, চল বাসায় যাই’। আমি তখন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বলতে থাকি যে, আমাকে টিজ করায় আমার ছোট ভাই সামনে আসছে, আপনারা সরেন, ওরা আরও উত্তেজিত হতে থাকে এবং আমার ভাইকে দুজন ফেলে মারতে শুরু করে। তখন আমি আমার ভাইকে রক্ষার জন্য এগিয়ে গেলে পেছন থেকে বিবাদী জিশান ও অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা এসে আমাকে চুল ধরে হ্যাচকা টান দিয়ে বুকে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানি করে ও আমার শরীরে এলোপাথাড়ি কিল, ঘুষি ও লাথি দেয়।

অন্যদিকে, আমার ভাইকে মারপিট করতে দেখে আমার বন্ধু মাশফিক ভিডিও করতে গেলে তাকেও এলোপাথাড়ি কিল, ঘুষি ও লাথি মারে। এরপর বিবাদী জিশানসহ অজ্ঞাতনামা দুজন ব্যক্তি আমাকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া শুরু করে এবং আরও বলতে থাকে যে, ‘রেপ করসি?’, ‘হ দেখ রেপ করসি’।

ওই সময় বিবাদী জিশান মোবাইল ফোনে ফোন করে আরও অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন লোক নিয়ে আসে। সবাইকে শনাক্তও করা যায়নি, বিবাদী জিশানসহ অজ্ঞাতনামা দুজন ব্যক্তি আমাদের ফোন ফেলে দিচ্ছিল বারবার লাথি দিয়ে। বলছিল কার কাছে যাবি যা? 

বিজ্ঞাপন

এদের মধ্যে একজন বলল, আমি আনন্দ টিভির সাংবাদিক, যা কার কাছে বিচার চাওয়ার চেয়ে নে। তখন এক বয়স্ক লোক এসে ওদের সাপোর্ট দেওয়ার চেষ্টা করে বলতে থাকে যে, আমি সমিতির নেতা, সমাধান করে দিব। তখন আমি ও আমার ছোট ভাই চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উদ্দেশে চলে যাই।

বিজ্ঞাপন

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী দৈনিক নিউ এজের সাংবাদিক রাফিয়া তামান্না বলেন, আমি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের লক্ষ্যে মামলা করেছি। আসামিদের শনাক্তে পুলিশকে ফুটেজ দিয়েছি। জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানান তিনি।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আতাউর রহমান আকন্দ বলেন, মামলায় সোয়েব রহমান জিশান (২৫) নামে এক যুবকের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয়ের দুই যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। ভুক্তভোগী তরুণী কিছু ফুজেটও দিয়েছেন পুলিশকে। থানার একাধিক টিম কাজ করছে। ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

এর আগে, সাংবাদিক রাফিয়া তামান্না তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেন, নিজের বাসার সামনে নিরাপদ না? আমাকে টিজ করার সময় আমার ভাই ছেলেগুলোর সামনে এসে দাঁড়ায়। উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় আমার ভাইকে মারা শুরু করল। ভাইকে উঠাতে গেলে সবুজ জামা পরিহিত ছেলেটা আমার চুলে হ্যাঁচকা টান দেয়। কালো গেঞ্জি পরিহিত ছেলেটা লাথি মারে। সম্ভবত এলাকার মাস্তানদের পালিত মাস্তান এরা। 

আরটিভি/কেএইচ

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission