গাইবান্ধায় বন্যার আরও অবনতি, নতুন এলাকা প্লাবিত
ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট ও করতোয়া নদীর পানি বিপদসীমার অনেক ওপর দিয়ে বইছে। নদ-নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
তৃতীয় দফা বন্যার কারণে আরও ৭টি ইউনিয়নসহ জেলার ৬ উপজেলার ৩৬টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা প্লাবিত হয়েছে। এরমধ্যে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, কঞ্চিবাড়ী, শ্রীপুর, চন্ডিপুর, কাপাশিয়া ও শান্তিরাম ইউনিয়ন, ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া, উডিয়া, উদাখালী, গজারিয়া, ফুলছড়ি, এড়েন্ডাবাড়ী ও ফজলুপুর ইউনিয়ন, সাঘাটা উপজেলার ভরতখালী, সাঘাটা, ঘুড়িদহ, হলদিয়া ও জুমারবাড়ী ইউনিয়ন, সদর উপজেলার কামারজানী, মোল্লারচর, খোলাহাটী, গিদারী, মালিবাড়ী, ঘাগোয়া ও বল্লমঝাড় ইউনিয়ন, সাদুল্লাপুর উপজেলার বনগ্রাম, কামারপাড়া, রসুলপুর ইউনিয়ন, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার হরিরামপুর, ফুলবাড়ী, মহিমাগঞ্জ, রাখালবুরুজ, দরবস্ত ও শালমারা ইউনিয়ন এবং পোবিন্দগঞ্জ পৌরসভা।
বন্যা কবলিত এলাকায় শুকনা খাবার ও বিশুদ্ধপানি, জ্বালানি সংকট এবং পয়ঃনিষ্কাশনের সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। দেখা দিয়েছে পানিবাহিত ডায়রিয়া, আমাশয় ও চর্মরোগ। গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার শালমারা ইউনিয়নে পানিতে ডুবে এক প্রতিবন্ধীর মৃত্যু হয়েছে।
দীর্ঘ মেয়াদী বন্যায় অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে গবাদিপশু নিয়ে উঁচু বাঁধ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে। পলিথিনের খুপরি ঘর তুলে সেখানে রোদ-বৃষ্টিতে ভিজে মানবেতর জীবনযাপন করছে। সেখানেও বিশুদ্ধ পানি ও পয় নিষ্কাশন সমস্যা রয়েছে। এছাড়া গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। খাদ্য ও কর্মের অভাবে গবাদিপশু নিয়ে চরম দুর্দশার মধ্যে দিন কাটছে তাদের।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, আজ শনিবার সকাল ৬টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি ফুলছড়ি পয়েন্টে বিপদসীমার ৯৮ সেন্টিমিটার, ঘাঘট নদীর পানি শহর পয়েন্টে বিপদসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং করতোয়া নদীর পানি কাটাখালী পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি আগামী ৪ থেকে ৫ দিন থাকবে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান জানান।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা এ.কে.এম ইদ্রিস আলী জানান, বন্যা কবলিত ৩৬টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ৩৬ হাজার ৫৭৯ পরিবারের ১ লাখ ৪৬ হাজার ৮৫৬ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তারা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত। ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২৯ হাজার ৮৭৫টি। সড়ক ও বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২৩ দশমিক ৪৫৬ কিলোমিটার।
তিনি আরও জানান, বন্যার্তদের জন্য ১৬৭টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এরমধ্যে ৯২টি আশ্রয় কেন্দ্র ১৭ হাজার ৭৫৫ জন আশ্রয় নিয়েছে। অনেকে উঁচু বাঁধ ও সড়কে আশ্রয় নিয়েছে।
এসএস
মন্তব্য করুন