পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথের ভোগান্তি বেড়েই যাচ্ছে
নাব্যতা সংকটের কারণে গেল সাত দিন ধরে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। ফেরি পারাপারে অতিরিক্ত সময় লাগায় ট্রিপ সংখ্যা কমে গেছে। এর ফলে ঘাট এলাকায় আটকা পড়ছে শত শত যানবাহন। যাত্রীবাহী ও জরুরি পণ্যবাহী গাড়িগুলোকে অগ্রাধিকারভিত্তিতে পার করায় দীর্ঘ সময় ধরে আটকা পড়ে থাকছে পাঁচ শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন ট্রাকের চালক ও সহযোগীরা।
কয়েকদিন ধরে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌপথে সন্ধ্যা ছয়টা থেকে ভোর ছয়টা পর্যন্ত ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় সেই পথের গাড়িগুলো পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে আসার ফলে ভোগান্তি আরও বেড়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে ঘাট এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, ট্রাক পাটুরিয়া ঘাট থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে উথলী সংযোগ সড়কে শতশত ট্রাক আটকা রয়েছে। ২০ থেকে ২৪ ঘণ্টা সময় আটকে থাকা ট্রাকের চালক, সহযোগীরা নানা দুর্ভোগে রয়েছেন।
মাগুরাগামী ট্রাক চালক আলী হোসেন বলেন, ‘আমি পাটুরিয়া ঘাটে এসেছি মঙ্গলবার সকালে। প্রথমে মহাসড়কে এবং পড়ে টার্মিনালে এস আটকা পড়েছি। আজও পার হতে পারবো কিনা বলতে পারছি না। থাকা-খাওয়া-শৌচাগারসহ নানা সমস্যা রয়েছে। হাতের টাকা শেষ হয়েছে। আরও দীর্ঘ সময় থাকতে গেলে না খেয়ে থাকতে হবে। অন্যথায় বিকাশে টাকা আনতে হবে।
খুলনাগামী ট্রাক চালক সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমি ঘাটে আটকা পড়েছি ২০ ঘণ্টা পার হয়েছে। মনে হচ্ছে আজ পার হতে পারবো না। ভোগান্তি নিরসনে সরকারের বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া দরকার।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিস) আরিচা আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (মেরিন) আব্দুস সাত্তার বলেন, নাব্যতা সংকটের কারণে ৩০ আগস্ট থেকে ফেরিগুলো বিকল্পপথে চলাচল করছে। একারণে ফেরিগুলোকে মূল চ্যানেল থেকে কিছুটা ঘুরপথে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে সময় কিছুটা বেশি লাগছে। তবে, মূল চ্যানেলে নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে সেখানে ড্রেজিং চলছে। আশাকরি আগামী ৪-৫ দিনের মধ্যে চ্যানেল দিয়ে ফেরি চলতে পারবে এবং বিদ্যমান সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
বিআইডব্লিউটিসি পাটুরিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. সালাম হোসেন বলেন, সাধারণত এই পথে প্রতিদিন আড়াই হাজার গাড়ি চলাচল করে। গত কয়েকদিন ধরে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌপথে সন্ধ্যা ছয়টা থেকে ভোর ছয়টা পর্যন্ত ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় সেই পথের গাড়িগুলো পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে চলাচল করায় গাড়ির চাপ বেড়ে যাচ্ছে। নাব্যতা সংকট এবং ঘাটে অতিরিক্ত গাড়ির চাপ থাকায় যাত্রী ও জরুরি পণ্যবাহী গাড়িগুলোকে অগ্রাধিকারভিত্তিতে পার করা হচ্ছে। ফলে আটকা পড়ছে সাধারণ পণ্যবাহী ট্রাকগুলো। ১৭টি ফেরি দিয়ে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়ে ফেরি পারাপার করছি।
শিবালয় সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানিয়া সুলতানা বলেন, নাব্যতা সংকটের কারণে ফেরি পারাপারে সময় বেশি লাগছে। এতে ট্রিপ সংখ্যা কমে যাচ্ছে। যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে যাত্রীবাহী ও জরুরি পণ্যবাহী গাড়িকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পার করা হচ্ছে। একারণেই ঘাট এলাকায় সাধারণ পণ্যবাহী ট্রাকগুলো আটকা থাকছে। পুলিশ সদস্যরা ঘাটের শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে কাজ করছেন। ঘাট এলাকায় অতিরিক্ত ট্রাকের চাপ থাকায় কিছু ট্রাককে উথুলী সংযোগ সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সেগুলিকেও পার করা হবে।
আরও পড়ুন
এসএস
মন্তব্য করুন