সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণের ৫ লাখ টাকা নিয়ে জনমনে অসন্তোষ (ভিডিও)
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হলে পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের যে খসড়া বিধিমালা হয়েছে তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে নিরাপদ সড়কের জন্য আন্দোলনকারীরা। আর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইনের কঠোর প্রয়োগ ও শাস্তি কার্যকর না হলে সড়কে দুর্ঘটনা রোধ সম্ভব নয়। সেইসঙ্গে ক্ষতিপূরণ দিতে মালিকপক্ষকে বাধ্য করতে হবে।
দুই বছর আগে নতুন সড়ক পরিবহন আইন পাস হলেও তা কার্যকর হয়েছে গত বছরের নভেম্বরে। আইনে ক্ষতিপূরণের কথা থাকলেও বিধিমালা না-থাকায় তা আলোর মুখ দেখেনি। ফলে ক্ষতিপূরণ দেওয়া নিয়ে নানারকম জটিলতা তৈরি হয়।
এর অন্যতম উদাহরণ আপিল বিভাগের নির্দেশের পরও কলেজছাত্র রাজীব হোসেনের পরিবার ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের এক টাকাও পাননি। এছাড়া ২০১৮ সালে গ্রিনলাইন পরিবহনের বাসের চাপায় পা হারানো রাসেল সরকার পেয়েছেন ১০ লাখ টাকা। আদালত তাকে আরও ২০ লাখ টাকা দিতে বলেছে।
এ অবস্থায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হলে তিন লাখ এবং নিহত হলে পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের বিধিমালা করতে যাচ্ছে সরকার। নিরাপদ সড়কের দাবিতে সোচ্চার ব্যক্তিরা বলছেন, ক্ষতিপূরণের পরিমাণ আরও বাড়ানো প্রয়োজন এবং টাকা পেতে যাতে ভোগান্তি পোহাতে না হয়।
যাত্রী কল্যাণ সমিতি মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, এই ক্ষতি পূরণ যথেষ্ট হতে পারে না। ট্রাফিক আইনে যে জরিমানাগুলো আসে সেগুলো তহবিলে জমা রাখা এবং নিহত ব্যক্তির পরিবার’কে ২০ VfJ টাকা ও আহত ব্যক্তিকে ৫ লাখ টাকা করে দেয়া এখন সময়ের দাবি।
বুয়েটের এক্সিডেন্ট রিসার্চ ইন্সটিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. হাদিউজ্জামান বলছেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সবচেয়ে জরুরি এখাতে শৃঙ্খলা ফেরানো এবং দায়ীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা। মানুষ নিহত বা আহত হলে তার যে ক্ষতি হচ্ছে তা বিবেচনা করে টাকার পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে মালিক এবং শ্রমিক দুটি পক্ষই খুব শক্তিশালী। সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে আইন হয়েছে তবে আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো আইনের প্রয়োগ হচ্ছে না।
চালকদের বেপরোয়া আচরণ ক্ষতিপূরণ দিতে অনীহা এবং আইন বাস্তবায়নে বড় বাধা পরিবহন মালিকেরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন তহবিল ব্যবস্থাপনায় মালিক-শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের যেন কর্তৃত্ব না থাকে।
সড়ক দুর্ঘটনা মামলার দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল এবং ট্রাস্টি বোর্ডের অনুমোদনে সর্বোচ্চ ১০ কার্যদিবসের মধ্যে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নিয়ম কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জিএম/জেবি
মন্তব্য করুন