অনাকাঙ্খিত যাচাই-বাছাই থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার দাবিতে গোপালগঞ্জে বয়োবৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধদের সংবাদ-সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় সদর উপজেলার গোবরা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ১৯ মুক্তিযোদ্ধা এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ-সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, ১৯৯৬ সালে গোপালগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কাছে সরকার প্রদত্ত চিঠির প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও যাচাই-বাছাই শেষে তাদের নাম সরকারি গেজেটে প্রকাশ হয়।
তখন তারা প্রাথমিকভাবে তিনশ’ টাকা ভাতা পেতেন; যা এখন ১২ হাজার টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে। অথচ জামুকা ও মন্ত্রণালয়ের ঠেলাঠেলির কারণে ২০০৩ সালে, এরপর ২০০৫ সালে, এরপর ২০১৭ সালে তাদের যাচাই-বাছাই ও গেজেট প্রকাশ হয়েছে। বর্তমানে তারা ভাতাও পাচ্ছেন। তারপরও পুনরায় যাচাই-বাছাইয়ের জন্য আগামী ৯ জানুয়ারি তাদেরকে ইউএনও অফিসে ডাকা হয়েছে। এভাবে বারবার অনাকাঙ্খিত যাচাই-বাছাইসহ হয়রানির সম্মুখীন হয়ে তারা এখন বিব্রত ও ক্লান্ত।
তারা বলেন, এলাকার এই ১৯ মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে ইতোমধ্যে ১১ জন মারা গিয়েছেন। জীবিতে আটজনের দুইজন অসুস্থ অবস্থায় ঘরে পড়ে আছেন। অনেকে বয়সের ভারে ন্যুজ বা রোগ-শোকে আক্রান্ত হয়ে স্মৃতি বিভ্রম হয়েছে। এমতাবস্থায় নতুন করে যাচাই-বাছাইয়ের সময় সহযোগী তিনজন জীবিত মুক্তিযোদ্ধা হাজির করার যে শর্ত দেয়া হয়েছে, তা অত্যন্ত কঠিন। তাই এ ধরনের অনাকাঙ্খিত যাচাই-বাছাইয়ের হাত থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার দাবি জানিয়ে তারা এ সংবাদ-সম্মেলন আয়োজন করেছেন।
মুক্তিযোদ্ধারা আরও বলেন, আমাদের সরকার প্রদত্ত সার্টিফিকেটগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হোক। লাল বার্তা নীল বার্তা নয়; আমাদের নামে সরকার যে চিঠি পাঠিয়েছিল সেই বার্তা কী ছিল, সেটা দেখলেই আমাদের সত্যাসত্য প্রমাণিত হবে। এই বৃদ্ধ বয়সে মৃত্যুপথযাত্রী মুক্তিযোদ্ধারা যারা এখনও বেঁচে আছি, তাদেরকে অনাকাঙ্খিত যাচাই-বাছাইয়ের হাত থেকে নিস্কৃতি দেয়া হোক’ এমনটাই দাবি জানিয়েছেন বয়োবৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধারা।
সংবাদ-সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন চেয়ারম্যান সফিকুর রহমান চৌধুরী (টুটুল)। এসময় মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আলীম ফকির, মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম মোল্যা, মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন মৃধা, মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান মৃধা, মুক্তিযোদ্ধা মো. আতিয়ার রহমান শেখ ও মুক্তিযোদ্ধা মুন্সী জাকির হোসেনসহ অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্য ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
জেবি