ঢাকাশনিবার, ০৩ মে ২০২৫, ২০ বৈশাখ ১৪৩২

ভাসানচরে দ্বিতীয় ধাপে আসা রোহিঙ্গাদের বাসস্থান বুঝিয়ে দেয়া হলো 

হাতিয়া প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

বুধবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২০ , ০৫:২৬ পিএম


loading/img
ছবি আরটিভি নিউজ

সবার মুখে উজ্জ্বল হাসি, কেউ ব্যস্ত ঘর গোছানো নিয়ে, কেউ বা দড়ি টানিয়ে নিচ্ছে কাপড় শুকানোর জন্য, শিশুরা ছুটাছুটি করছে দিগবিদিক।

বিজ্ঞাপন

ভবিষ্যতে কি হবে তা জানা নেই কারো। তবু পাহাড়ের গিজ গিজ আবাস্থল থেকে অনেকগুণ ভালো পরিবেশ পেয়ে  খুশি সবাই।

গতকাল মঙ্গলবার ভাসানচরে দ্বিতীয় দাপে আগত রোহিঙ্গাদের দ্বিতীয় দিন বুধবার কাটলো এভাবে।

বিজ্ঞাপন

দ্বিতীয় দাপে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে একজন রহিমা (৩৪)।

স্বামী ও চার সন্তান নিয়ে তিনি বরাদ্ধ পেয়েছেন ভাসানচরে পাঁচ নম্বর ক্লাস্টারের সাত নম্বর বাসা। আলাপকালে রহিমা জানান, প্রথম দাপে আসা রোহিঙ্গা স্বজনরা মোবাইল ফোনে ভাসানচর সম্পর্কে অনেক ভালো বলেছে। অনেকে ভিডিও কল দিয়ে ভাসানচরের বিভিন্ন দৃশ্য দেখিয়েছে। বাস্তবে এসে তাই দেখলো রহিমা। তার মতে এখানে সবার খুবই ভালো লাগবে। হাসপাতালসহ আধুনিক অনেক সুযোগ সুবিধা রয়েছে এখানে।

বিশেষ করে বাচ্চারা অনেক খুশি। তারা খেলাধুলার জন্য পেয়েছে মাঠ ও রয়েছে সুপ্রসস্থ রাস্তা।

বিজ্ঞাপন

রহিমা আরও জানান, প্রথম দিন তাদেরকে নৌ-বাহিনীর সদস্যরা রান্না করা খিচুড়ি খেতে দিয়েছে। দ্বিতীয় দিন বুধবার সকালে দেওয়া হয়েছে ভাত, ডাল ও ডিম। আরও কয়েক দিন তাদেরকে রান্না করা খাবার সরবারহ করা হবে বলে তিনি শুনেছেন বলে জানান।

এদিকে দ্বিতীয় দাপে আজ মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম থেকে নৌ-বাহিনীর পাঁচটি জাহাজে এসেছে ৪২৮টি পরিবারের ১৮০৪ জন রোহিঙ্গা সদস্য। তাদের বসবাসের জন্য দেওয়া হয়েছে ৫, ৬, ১১ ও১২ নং ক্লাস্টারের বাসাগুলো। ৪৩০টি বাসা তাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। সবগুলো বাসা একই মানের হওয়ায় বিভাজন নিয়ে ছিল না কোনও মতোবিরোধ।

দ্বিতীয় দাপে আসা রোহিঙ্গ সদস্যের মধ্যে রয়েছে পুরুষ ৪৩৩, মহিলা ৫২৩ ও শিশু ৮৪৮ জনসহ মোট এক হাজার ৮০৪ জন। এছাড়াও গেলো চার ডিসেম্বর প্রথম ধাপে এসেছে ৮১০ জন শিশু ৩৬৮ জন পুরুষ ও ৪৬৪ জন নারীসহ ১৬৪২ জন রোহিঙ্গা সদস্য। এর আগে পালিয়ে বিদেশ যাওয়ার সময় নৌ-বাহিনীর সদস্যরা আটক করে ৩০৬ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচর নিয়ে আসে। এ নিয়ে মোট তিন হাজার ৭৬২ জন রোহিঙ্গা ভাসানচর অবস্থান করছে।

এদিকে ভাসানচরে অবস্থান করা রোহিঙ্গাদের বেকারত্ব দূর করার লক্ষ্যে চিন্তা ভাবনা করছে সরকার। এই লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশে সম্প্রতি ভাসানচর পরিদর্শন করেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের একটি টিম। শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব (কারিগরি) ড. মো. ওমর ফারুকের নেতৃত্বে সাত সদস্যবিশিষ্ট এই টিম ভাসানচর ঘুরে এসে একটি প্রতিবেদন দেওয়ার কথা। যাতে রোহিঙ্গাদের তাদের মতো করে কিছু কারিগরি শিক্ষা দেওয়া যেতে পারে।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, রোহিঙ্গা স্থানান্তরের জন্য নিজস্ব তহবিল থেকে তিন হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে সরকার। সেখানে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। ভাসানচরের পুরো আবাসন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।

উল্লেখ্য, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যা ও নির্যাতনের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা। আগে আশ্রয় নেয়াসহ বর্তমানে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন।

জেবি

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |