ঢাকাশনিবার, ০৩ মে ২০২৫, ২০ বৈশাখ ১৪৩২

কোটিপতি হবার স্বপ্নে যা ছিলো তাও হারালেন জলিল

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

বুধবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ , ০৬:০১ পিএম


loading/img
ছবি সংগৃহীত

গভীর রাতে বাবার ফোন। বাবা আমি আজমির শরিফ থেকে বলছি। তুই ভাগ্যবান। কয়েকদিনের মধ্যে তুই কোটিপতি হয়ে যাবি। তাই তোকে বাবার দরবারে কিছু জায়নামাজ কিনে দিতে হবে। পরের দিন আবার ফোন, দরবারের কিছু ল্যাংড়া ছেলেদের খাওয়াতে হবে। এভাবে জিনের বাদশা সেজে প্রতারক চক্র বিভিন্ন সময় ভয়ভীতি আর ধর্মীয় অনুভূতির দোহায় দিয়ে কোটিপতি হবার স্বপ্ন দেখায় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দোস্ত গ্রামের আমতলা পাড়ার খলিলের ছেলে ভ্যানচালক আব্দুল জলিলকে। 

বিজ্ঞাপন

সেই স্বপ্নে বিভোর হয়ে প্রতারণার ফাঁদে পা দেন জলিল। 

বিভিন্ন সময় বিকাশের মাধ্যমে প্রতারক চক্রের হাতে তুলে দেয় দেড় লাখ টাকা। বিনিময়ে প্রতারক চক্র জলিলকে বগুড়ায় নিয়ে গিয়ে লাল কাপড়ে মোড়ানো একটি পিতলের মূর্তি ধরিয়ে দেয় হাতে।

বিজ্ঞাপন

কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন ভাঙলে দিশেহারা হয়ে পড়েন হতদরিদ্র ভ্যানচালক জলিল।

ভুক্তভোগী ভ্যানচালক আব্দুল জলিল জানান, জীনের বাদশা প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়েছেন তিনি। 

তাকে বিভিন্ন সময় দরবারে জায়নামাজ, ল্যাংড়া ছেলেদের খাওয়ানো, দরবার শরিফ নির্মাণ করে দিলে কোটিপতি হয়ে যাবার স্বপ্ন দেখায় প্রতারক চক্র।

বিজ্ঞাপন

কোটিপতি হবার স্বপ্নে বিভোর হয়ে দিনাথপুর করিমের বিকাশের দোকান ও দর্শনা বাসস্ট্যান্ড মর্ডান স্টোরের জাফরের বিকাশের দোকান থেকে কয়েক দফায় জনৈক জিনের বাদশা মরজেমের বিকাশ নম্বর ০১৭৮৬৯০৩৯৩৬ এ ধারকর্য এবং স্ত্রীর গহনা বিক্রি করে ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা পাঠান। বিনিময়ে গত শনিবার রাত ১০টার দিকে বগুড়ার কোনও এক জায়গায় নিয়ে গিয়ে প্রতারকচক্র তার হাতে লালকাপড়ে মোড়ানো একটি পিতলের মূর্তি তুলে দেয়। 

বিষয়টি সাত দিনের মধ্যে কাউকে না জানানোর জন্য বলে দেয়।  আর এই সাত দিনের মধ্যে ঘরের মধ্যে সাত হাড়া মূল্যবান মহর পাবে বলে জানায়। 

আর এক একটি মহরের মূল্য হবে ২৫ লাখ টাকা।  তাহলে কোটিপতি হওয়া তো হাতের ময়লা। 

তিনি আরও জানান, ঘরের মধ্যে মহরের হাড়া না পাওয়ায় টেনশনে পড়ে যান তিনি। এরই মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার সকালে আবারও সেই জ্বীনের বাদশার ০১৮৭৭০০১২৫৭ নম্বর থেকে ফোন দিয়ে তাকে ওই বিকাশ নম্বরে ৫০ হাজার টাকা পাঠানোর কথা বলে।  না দিলে ঘরে সাপ উঠবে এবং চরম অমঙ্গল হবে বলে ভয় দেখায়।  গত ১৫ দিন ধরে গভীর রাতে জ্বিনের বাদশা জনৈক মরজেম তার সঙ্গে এই প্রতারণার খেলা খেলে টাকাগুলো হাতিয়ে নেয়।  যখন স্বপ্ন ভাঙ্গে ততক্ষণে তার সব শেষ।  টাকা খুইয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে ভ্যানচালক জলিল ও তার পরিবার। এ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাতে জলিল দর্শনা থানায় একটি অভিযোগ করেছেন বলে জানান।

এ বিষয়ে দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাব্বুর রহমান আরটিভি নিউজকে জানান, ভুক্তভোগী ভ্যানচালক জলিল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জেবি

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |