নওগাঁর বদলগাছীতে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই ভেঙে পড়েছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের জন্য নির্মিত ঘরের দেয়াল। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করায় বাড়ির দুটি দেয়াল ভেঙে পড়েছে বলে জানা গেছে। উপজেলার সদর ইউনিয়নের জিয়ল গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থ বছরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমতলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের জীবনমান উন্নয়নে গৃহ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় উপজেলায় শেষ পর্যায়ে ৮টি ঘরের বরাদ্দ আসে। এ ৮টি ঘরের মধ্যে দু’টি বরাদ্দ দেয়া হয় জিয়ল গ্রামের মৃত-জগেন্দ্র নাথ পাহানের ছেলে বিকাশ পাহান ও আকাশ পাহানকে। ঘর নির্মাণে ইট, মোটা বালি, বিট বালি ও ভীত খননে শ্রমিকদের পারিশ্রমিকের জন্য টাকা দিতে হয়েছে উপকারভোগীদের।
গ্রামবাসীরা জানান, ঘর নির্মাণে ১নং ইট ব্যবহারের কথা থাকলেও দেয়া হয়েছে ৩নং ইট। মসলা তৈরিতে নিম্নমানের স্থানীয় বিট বালুর সঙ্গে সিমেন্টের পরিমাণ দেয়া হচ্ছে কম। ফলে নির্মাণাধীন অবস্থায় ভেঙে পড়ে ঘরের দেয়াল।
আকাশ পাহান বলেন, ঠিকাদার ও মিস্ত্রীরা দু’টি ঘরের জন্য ৮ হাজার ৩নং ইট ও নিম্নমানের বিট বালু আনেন। এছাড়া ২ হাজার ইট ও ১ গাড়ি ভালো মোটা বালু ও ১ গাড়ি বিট বালু আমাদের নিজের অর্থে কিনতে হয়। ঘরের ভীত কাটতে শ্রমিকের খরচ আমাদেরকেই দিতে হয়েছে। নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ও সিমেন্ট কম দেয়ায় নির্মাণ শেষ হওয়ার আগেই দেয়াল ভেঙে পড়েছে।
বিকাশ পাহান জানান, পাশের উপজেলার সুমন নামের এক মিস্ত্রি ঘর দুটির নির্মাণ কাজ শুরু করেন। সহযোগী মিস্ত্রি ছিলেন স্থানীয় কৃষ্ণ পাহান। তারা আরও বলেন, নির্মাণ শেষের আগেই ঘরের দেয়াল ভেঙে পড়ছে। পরে যে ঘর ভেঙে পড়বে না তার গ্যারান্টি কী?
সুমন মিস্ত্রির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেনি। তার সহযোগী স্থানীয় কৃষ্ণ পাহান জানান, ঘর নির্মাণে ৩নং ইট, স্থানীয় বিট বালু, সিমেন্টের ভাগ কম দিয়ে গাঁথুনি করায় দেয়াল ভেঙে গেছে। এছাড়া আকাশ পাহানের ঘরের গাঁথুনি নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে করায় কয়েকদিন আগে তার ঘরের পশ্চিম দেওয়াল হেলে গিয়ে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছিল। পরে তা মেরামত করা হয়।
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের জন্য গৃহ নির্মাণ প্রকল্পের উপজেলা কমিটির সদস্য সচিব (পিআইও) মাহবুবুর রহমান বলেন, এ ঘর নির্মাণে বরাদ্দের বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও প্রকল্প সভাপতি আলপনা ইয়াসমিন বলেন, আপনি যা পারেন লিখেন। দুর্নীতি করলে আমিই করছি, উন্নয়ন করলেও আমিই করছি।
এসআর/