পটুয়াখালী আমতলী উপজেলায় ৫ম বিয়েতে সম্মতি না দেয়ায় চতুর্থ স্ত্রী সালমা বেগমকে (৩৫) কুপিয়ে হাতের আঙুল কেটে দিয়েছে স্বামী মোকলেচ মাতুব্বর। এ সময় আহত গৃহবধূকে উদ্ধার করে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) রাতে উপজেলার পাতাকাটা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে বিয়ে পাগল মোকলেচকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
জানা গেছে, উপজেলার পাতাকাটা গ্রামের হাতেম আলী মাতুব্বরের ছেলে মোকলেচ মাতুব্বর এ পর্যন্ত ৪টি বিয়ে করেছেন। চতুর্থ স্ত্রী হিসেবে পটুয়াখালী জেলার বোতলবুনিয়া গ্রামের মোনাসেফ সিকদারের মেয়ে সালমাকে ৮ শতাংশ জমি লিখে দিয়ে এ বছর জানুয়ারি মাসে বিয়ে করেন মোকলেচ। কিন্তু চতুর্থ স্ত্রীতে তিনি সন্তুষ্ট নন। তিনি আবার ৫ম বিয়ে করার উদ্যোগ নেন। ৫ম বিয়ে করতে তিনি চতুর্থ স্ত্রীর কাছে সম্মতি ও জমি বিক্রি করে টাকা দাবি করেন।
এ সময় চতুর্থ স্ত্রী সালমা সম্মতি ও টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে মোকলেচ নিজের ঘরের সিঁদ কেটে শ্বশুরবাড়ির দেয়া সমুদয় মালামাল চুরি করে নিয়ে যান। ওই সময় স্ত্রী সালমা বেগম বাড়িতে ছিলেন না। পরে মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) বিকেলে সালমা বাড়িতে এসে ঘরে মালামাল না পেয়ে স্বামী মোকলেচকে জিজ্ঞাসা করেন। বিয়ের সম্মতি, টাকা ও মালামাল নিয়ে কয়েক দফায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। ওই দিন রাত ১০টার দিকে ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ডান হাতের বৃদ্ধাঙুলি কেটে বিছিন্ন করে দেন।
পরে স্বজনরা দ্রুত তাকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। এ সময় হাসপাতালের চিকিৎসক শাহাদাত হোসেন তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। এ ঘটনায় বুধবার (১১ আগস্ট) সালমার বাবা বাদী হয়ে মোকলেচকে আসামি করে মামলা করেছেন। পরে একই দিন তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে বিয়েপাগল মোকলেচকে গ্রেপ্তার করে বুধবার (১১ আগস্ট) তাকে আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করেছে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
সালমা বেগম বলেন, ‘মোর স্বামী আবার বিয়া হরার লইয়া মোর কাছে সম্মতি ও জাগা বেইচ্চা টাহা চায়। মুই এইয়্যা দেতে রাজি না অওয়ায় চুরি হইর্যা ঘরের মালামাল লইয়্যা গ্যাছে। মুই এ্যাইয়্যার প্রতিবাদ করায় মোরে কোপাইয়্যা আতের আঙুল কাইট্টা দেছে। মুই এইয়্যার বিচার চাই।’
ভুক্তভোগীর বাবা মোনাসেফ সিকদার বলেন, বিয়ের পর থেকেই মেয়েকে মোকলেচ নির্যাতন করে আসছে। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে নীরবে সহ্য করেছি। এখন আর পারছি না। তাই বাধ্য হয়ে মামলা করেছি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, মোকলেচ এ পর্যন্ত ৪টি বিয়ে করেছে। পুনরায় বিয়ে করতে উদ্যোগ নেয়। এতে স্ত্রী সালমা সম্মতি না দেয়ায় তাকে কুপিয়ে আহত করেছে। তার কর্মকাণ্ডে পরিবারের লোকজন অতিষ্ঠ।
জিএম