পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে মক্তবের এক ইমামের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বিচারের নামে উল্টো স্কুলছাত্রী ও তার পরিবারের সদস্যদের গালমন্দ করে বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য হুমকি দেয়া হয়েছে। বুধবার (২৫ আগস্ট) সকালে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার ফুকুরহাটি ইউনিয়নের ভাশিয়ালী কৃষ্টপুর গ্রামের মক্তবে ঘটেছে এ ঘটনা।
ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী ওই গ্রামের একজন দিনমজুরের মেয়ে এবং স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী।
ভুক্তভোগী ছাত্রী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আজ (বুধবার) সকালে আমিসহ আরও কয়েকজন আরবি শেখার জন্য মসজিদে ইমামের কাছে যাই। পড়া শেষে হুজুরের থাকার ঘর ঝাড়ু দেয়ার জন্য আমাকে এবং আরেকজনকে থাকতে বলে অন্যদের ছুটি দেয়। এরপর আরেকজনকে খাবারের বাটি ধোয়ার জন্য বাইরে পাঠিয়ে দিয়ে আমাকে ঘর ঝাড়ু দিতে বলে। আমি টেবিলের নীচ থেকে ঝাড়ু বের করতে গেলে হুজুর ঘরের দরজা বন্ধ করে আমার হাত ধরে। এখন ঝাড়ু দিতে হবে না, পরে দিস- এই বলে হুজুর আমাকে বিছানার উপর বসতে বলে। আমি ভয়ে দৌড়ে পালিয়ে যাই। বাড়ি এসে বিষয়টি সবাইকে জানাই।
ওই ছাত্রী আরও বলেন, এর আগেও এই হুজুর আমার সঙ্গে এমন করেছিল। পরে আমি মক্তবে যাওয়া বন্ধ করেছিলাম। কিন্তু সবাই বকাবকি করায় ফের মক্তবে যাওয়া শুরু করি আমি।
পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঘটনার পর স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. ফজলুর রহমান ও সহ-সভাপতি আবুল হাসেমসহ স্থানীয়রা সভা বসিয়ে বিচারের নামে উল্টো স্কুলছাত্রী ও তার পরিবারের সদস্যদের গালমন্দ করে এবং এসব কথা কাউকে না জানানোর জন্য হুমকি দেয়।
কৃষ্টপুর মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. ফজলুর রহমান আরটিভি নিউজকে বলেন, মক্তবে পড়তে গিয়ে ইমামের কাছ থেকে এ রকম ব্যবহার পেয়েছে বলে মেয়ের বাবার কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ পাওয়ার পর এলাকার মেম্বারসহ গণ্যমান্যদের নিয়ে বসে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে।
অভিযুক্ত কৃষ্টপুর মসজিদের ইমাম মাওলানা মো. মোকাব্বের হোসেন আরটিভি নিউজকে বলেন, মেয়েটির অভিযোগ সত্য নয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক আরটিভি নিউজকে বলেন, ঘটনাটি ইমাম সাহেবের সম্মানের দিকে চেয়ে সমাধান করা হয়েছে।
সাটুরিয়া থানার অফিসার-ইনচার্জ (ওসি) আশরাফুল আলম আরটিভি নিউজকে বলেন, এ বিষয়ে কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এসআর/