রমজান আর প্রচন্ড গরমে হাঁসফাঁস করছে মোংলার মানুষ। তারপর তাপদাহ থেকে সামান্য পরিত্রাণ পেতে গ্রীষ্মের মৌসুমি রসালো ফল তরমুজের চাহিদাও বেড়েছে।
ইফতারেও ধর্মপ্রাণ রোজাদাররা তরমুজই পছন্দ করেন। কিন্তু সিন্ডিকেটের অপতৎপরতায় এই তরমুজে হাতই দেওয়া যাচ্ছে না। আকাশ ছোঁয়া দামের কারণে এখন আর তরমুজের স্বাদ নিতে পারছেন না নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষেরা।
বুধবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে মোংলা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত বছর যে তরমুজ ৭০ টাকা, এবার সেই তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা। এমনকি তরমুজ ব্যবসায়ীরা আগের সব নিয়ম ভঙ্গ করে পিস হিসেবের পরিবর্তে কেজি দরে দরমুজ বিক্রি করছেন।
তারা আরও বলেন, এক কেজি তরমুজের দাম চলছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে। এতে পাঁচ কেজি একটি তরমুজের দাম ক্রেতাদের কিনতে হচ্ছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকায়। অথচ এই তরমুজ ১৫০ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়।
তরমুজ কিনতে আসা সাধারণ ক্রেতা আব্দুস সালাম, কবির হোসেন, আবুল বসার ও আল আমিন আরটিভি নিউজকে বলেন, পাইকারি ব্যবসায়ী, আড়তদার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা মিলেই সিন্ডিকেট গড়ে তরমুজের দাম বাড়িয়েছে। বাধ্য হয়েই তাদের বেঁধে দেওয়া দামে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে তরমুজ কিনতে বাধ্য হলেও প্রশাসনের কোনো নজরদারি নাই। রমজানের শুরু থেকে স্থানীয় প্রশাসন বাজার মনিটরিং বা এই সিন্ডিকেট চক্রের বিরুদ্ধে অভিযানে নামলে দাম কিছুটা দাম নাগালে আসতে বলেও জানান ক্রেতা সাধারণরা।
জানা গেছে, মোংলা বাজারের শাহ আলম, বাবুল, ইব্রাহিম, সিরাজ, বাচ্চু, সুমন, মোস্তফা, বাদশা, মোয়াজ্জেম তরমুজ সিন্ডিকেটের মূল হোতা। এরাই সিন্ডিকেট করে বাজারে তরমুজের দাম অস্বাভাবিক করেছে।
তবে সিন্ডিকেটের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তারা। ভালো ফলন না হওয়া ও বেশি দামে তরমুজ কিনে আনতে হয় বলে দাবি করেন তারা।
এদিকে মোংলার আশপাশ এলাকা লাউডোব, বাজুয়া, পিরোজপুর, বাগেরহাট ও মোড়েলগঞ্জ এলাকার কয়েকজন চাষীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, খেত থেকে তোলা তরমুজ তারা কেজিতে বিক্রি করছেন না। বেশিরভাগ চাষী তরমুজ শ’ হিসেবে বিক্রি করেন।
মোংলা উপজেলা বাজার মনিটরিং কমিটির সদস্য ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. নুর আলম শেখ আরটিভি নিউজকে বলেন, ব্যবসায়ীদের ওপর রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় প্রভাবশালী মহল চাঁদাবাজি করছে। যার ফলে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট চক্র বেপরোয়াভাবে তরমুজের দাম বাড়িয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসন ব্যবস্থা না নেওয়ায় ব্যবসায়ীরা তাদের রাম রাজত্ব অব্যাহত রাখছে।
জানতে চাইলে এ বিষয়ে মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কমলেশ মজুমদার বলেন, প্রথম দিকে কোনো অভিযোগ পাইনি, তবে এখন বিভিন্ন অভিযোগ পাচ্ছি। আজ কালের মধ্যেই তরমুজ সিন্ডিকেট চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান নামবো।