কুড়িগ্রামে অবিরাম বৃষ্টি ও উজানের ঢলে ফের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।ফলে ২য় দফা বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় পাউবো বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) দুপুরে জানায়, ধরলা নদীর সেতু পয়েন্টে পানি বেড়ে বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার ও শিমুল বাড়ি পয়েন্টে ১৪ সেন্টিমিটার এবং দুধকুমার নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে এসব নদ-নদীর অববাহিকার নিম্নাঞ্চলসমূহে ফের পানি উঠছে এবং ২য় দফা বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। চর ও দ্বীপচরের নিম্নাঞ্চলসমূহ আবারও নিমজ্জিত হচ্ছে।
প্রথম দফা বন্যায় অন্যান্য ফসলের ক্ষতি হলেও দ্বিতীয় দফা বন্যায় পাটখেতের ক্ষতি নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন এসব এলাকার কৃষকরা। প্রথম দফা বন্যার ধকল কাটতে না কাটতেই আবারও দ্বিতীয় দফায় ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করায় চরম বিপাকে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। জেলার নাগেশ্বরী, ফুলবাড়ি, কুড়িগ্রাম সদর ও উলিপুর উপজেলার অন্তত ৫০টি চরের নিম্নাঞ্চল নতুন করে আবারও প্লাবিত হয়েছে কিছু এলাকা। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত ৪০ হাজার মানুষ। এসব এলাকার পাট, ভুট্টা, আমন বীজতলা ও সবজি খেত নতুন করে পানিতে ডুবে গেছে।
সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের পোড়ারচরের জহুরুল ইসলাম জানান, এই চরের প্রত্যেকটি বাড়িতে ঘরের চাল পর্যন্ত পানি উঠেছিল। সেই পানি নেমে যাওয়ার পর আবারও পানি বৃদ্ধি পেয়ে ঘর-বাড়িতে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। এমনিতেই প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে নৌকায় বসবাস করেছি। পানি নেমে যাওয়ার তিন থেকে চার দিনের মাথায় আবারও পানি। এ সময় হাতে কাজ নেই। গত বন্যায় সব শেষ হয়ে গেছে। বউ, বাচ্চা নিয়ে খুব আতঙ্কে আছি।
সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর ভগবতী পুর এলাকার বাসিন্দা নুরবানু জানান, গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বন্যার দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছি।পানির কারণে ঠিকমত রান্না করতে পারিনি। ছোট ছোট বাচ্চা নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটাইছিলাম। বন্যার পানি কেবল নামতে না নামতেই আবারও বন্যা এসেছে। তাহলে আমাদের কষ্টের সীমা এবার আর থাকবে না।
পোড়ার চরের বাসিন্দা জহুরুল ইসলাম জানান, আমাদের প্রত্যেকটি বাড়িতে ঘরের চাল পর্যন্ত পানি উঠেছিল। সেই পানি নেমে যাওয়ার পর আবারও পানি বৃদ্ধি পেয়ে ঘরবাড়িতে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। এমনিতেই প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে নৌকায় বসবাস করেছি।পানি নেমে যাওয়ার তিন থেকে চার দিনের মধ্যে আবারও পানি বাড়ছে। এ সময় হাতে কাজ নেই। গত বন্যায় সব শেষ হয়ে গেছে।
এ ছাড়াও তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদেও পানি বেড়ে বিপৎসীমার সামান্য নিচ দিয়ে বইছে।এ অবস্থায় ২য় দফা বন্যার কারণে নদীপাড়ের মানুষজন আতঙ্কে রয়েছেন।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, উজানের ঢলে কুড়িগ্রামের ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও আগামী ৪৮ ঘণ্টায় উজানে ভারী বৃষ্টি না হলে দ্রুত পানি কমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।