আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনির উচ্ছেদ হওয়া বাড়ির নির্মাণসামগ্রী উন্মুক্ত নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়েছে। বুধবার (২০ জুলাই) দুপুরে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার উলানিয়া বাজারে উচ্ছেদ হওয়া বাড়ির স্থানে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল কাইয়ুমের উপস্থিতিতে নিলাম অনুষ্ঠিত হয়।
গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিষ কুমার জানান, ভেঙে ফেলা বাড়ির ইট এবং রড বিক্রিতে স্পট নিলাম দেওয়া হয়েছে। সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ২ লাখ ৬৫ হাজার টাকায় আবদুল জলিল নামের এক ব্যক্তি এসব মালামাল কিনে নেন।
মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনির বসতবাড়ি উচ্ছেদ করা হয়। সরকারি জমি ইজারা নিয়ে ইজারা নীতিমালা ভঙ্গ করে বাজারের চান্দিভিটার জমিতে পাকা বাড়িটি নির্মাণ করেছিলেন তিনি।
উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি উলানিয়া বন্দরে চান্দিভিটার জমি এক বছর মেয়াদি বন্দোবস্ত নিয়ে অবৈধভাবে পাকা স্থাপনাসহ দ্বিতল ভবন নির্মাণ করে বসবাস করে আসছিলেন। সরকারি জমি থেকে তার স্থাপনা সরিয়ে নিতে একাধিকবার নোটিশ দিলেও কোনো পদক্ষেপ নেননি। তাই মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসন উচ্ছেদ অভিযান চালায়।
এ বিষয়ে গোলাম মাওলা রনি বলেন, এটা আমার বাবার বাড়ি। ১৯৬০ সাল থেকে আমরা এখানে বসবাস করছি। এ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে হাইকোর্টে একটি রিট দাখিল করা হয়েছে। এরপরও কীভাবে তারা আমার ঘরবাড়ি উচ্ছেদ করেছে, তা জানি না।
এ প্রসঙ্গে সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনির ছোট ভাই ও উচ্ছেদকৃত স্থাপনার মালিক মো. গোলাম সরোয়ার বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে আমরা (গোলাম মাওলা রনির পরিবারের সদস্যরা) উচ্চ আদালতে রিট করেছি; যা এখন শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে এবং যথাযথ কাগজপত্রও দেওয়া হয়। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন আমাদের আবেদন আমলে না নিয়ে এভাবে বুলডোজার দিয়ে সবকিছু গুঁড়িয়ে দিয়েছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা।
এ ব্যাপারে উচ্ছেদ অভিযানের নেতৃত্বদানকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার আবদুল কাইয়ুম জানান, শর্ত অনুযায়ী সরকারি খাস জমি চান্দিনা বন্দোবস্ত নিয়ে সেখানে কোনো প্রকার পাকা ভবন নির্মাণ করতে পারবে না। কিন্তু এসব বন্দোবস্তকারীরা শর্ত ভঙ্গ করে সেখানে পাকা ভবন নির্মাণ করেন। এদেরকে একাধিকবার চিঠি দেওয়ার পরেও তাদের পাকা স্থাপনা সরিয়ে নেননি। তাই এই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হচ্ছে। এ উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং অবৈধ সকল স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।