ঢাকাসোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২

হলে প্রবেশের সময়সীমাকে চবি ছাত্রীদের প্রত্যাখ্যান

চট্টগ্রাম সংবাদদাতা, আরটিভি নিউজ

বুধবার, ২০ জুলাই ২০২২ , ১১:৫২ পিএম


loading/img
ছবি : সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের আবাসিক হলে রাত ১০টার মধ্যে প্রবেশের সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি ক্যাম্পাসে ঘটে যাওয়া একাধিক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সূত্র ধরে এই সময়সীমা নির্ধারণ করা হয় বলে জানা গেছে। বুধবার (২০ জুলাই) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসাম ভুঁইয়া।

বিজ্ঞাপন

প্রক্টর জানান, গত মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে বিভিন্ন হলের প্রভোস্ট, প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য ও ছাত্র উপদেষ্টার সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। বুধবার থেকেই তা কার্যকর হয়।

প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভুঁইয়া বলেন, আমাদের ট্রেন সাড়ে ৯টায় শহর থেকে আসে। তারা যাতে ১০টায় হলে প্রবেশ করতে পারে, সেই জায়গা থেকে আমরা এই সময় নির্ধারণ করেছি, যেন নিরাপত্তা ঠিক থাকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও ১০টার মধ্যে ছাত্রীদের হলে প্রবেশ করতে হয়।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, আমরা যখন টহল দিই, তখন অনেককেই রাত ১২-১টা পর্যন্ত বাইরে পাই। এটা তাদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। কোনো ছাত্রী যদি বাড়িতে থাকে সে তার বাড়িতে রাত ৮টার পর বের হতে পারবে?

তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছেন ছাত্রীরা। তারা এমন সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ করছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশরাফী নিতু বলেন, প্রত্যেকবারই যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটলে প্রথমেই প্রশাসন মেয়েদের হলের সময়সীমার দিকে নজর দেয়। এটা মাথাব্যথা হলে মাথা কেটে ফেলতে হবে ধরনের সমাধান।

বিজ্ঞাপন

তিনি দাবি করেন, যৌন নিপীড়নের ঘটনাগুলোতে অভিযুক্তকে শাস্তি দেয়ার নজির খুব কম। অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলেই যৌন নিপীড়নের ঘটনা বন্ধ করা সম্ভব।

হলে ফেরার সময়সীমা নিয়ে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্রী নওরিন আক্তার জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে না, কিন্ডারগার্টেনে পড়াশোনা করছি। সকল সমস্যার সমাধান- রাত ১০টার মধ্যে আবাসিক হলে প্রবেশের নির্দেশ! অর্থাৎ হাতে ব্যথা পেলে হাত কেটে ফেলা দেয়াই সমাধান।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট চবি শাখার সাধারণ সম্পাদক ঋজু লক্ষ্মী অবরোধ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী তার হল থেকে ব্যক্তিগত প্রয়োজনে যেকোনো সময়ই বের হতে বা ঢুকতে পারবে। প্রশাসনের দায়িত্ব শিক্ষার্থীর সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কিন্তু তা না করে রাত ১০টার মধ্যে মেয়েদের হলে প্রবেশের নির্দেশনাকে আমরা দায়সারা আচরণ বলে মনে করি এবং আমরা তা প্রত্যখ্যান করি।

তিনি বলেন, নিজের হলের সামনে নারী শিক্ষার্থীর শ্লীলতাহানির ঘটনাসহ গত কয়েক দিনে আরও বিভিন্ন ঘটনায় সমাধান হচ্ছে জড়িত অপরাধীদের শনাক্ত করে শাস্তির ব্যবস্থা করা ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় আরও বেশি জোর দেয়া। কিন্তু তা না করে উল্টো এমন নিয়ন্ত্রণমূলক নির্দেশনাকে আমরা কোনো সমাধান বলে মনে করি না। এর মাধ্যমে প্রশাসন তার ব্যর্থতার দায় শিক্ষার্থীদের ওপর চাপিয়ে দিতে চায়।

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বলেন, ছাত্রছাত্রীরা ১০টায় নাকি ১২টায় ঢুকবে সেটা এখন বলার বিষয় না। এটা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |