ঢাকারোববার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২

পুলিশ ফাঁড়ির গেটে কিশোরকে নির্যাতন, ভিডিও ভাইরাল

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

মঙ্গলবার, ২৬ জুলাই ২০২২ , ০৫:৩৬ পিএম


loading/img
ছবি : সংগৃহীত

ভ্যান চুরির অভিযোগে গোপালগঞ্জে ইমন মোল্লা (১৭) নামে এক কিশোরের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। এ ঘটনায় ওই কিশোরকে দফায় দফায় বেধড়ক মারপিট, শরীরে বিড়ির ছ্যাঁকা দেওয়া ও কাঁচি দিয়ে মাথার চুল কেটে ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (২৩ জুলাই) সকালে কাশিয়ানী উপজেলার রামদিয়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের সামনেই এমন বর্বরোচিত ঘটনাটি ঘটে। নির্যাতনের শিকার ইমন নিজামকান্দি ইউনিয়নের উত্তর ফলসি গ্রামের ইসলাম মোল্লার ছেলে।

স্থানীয়রা জানায়, ভ্যান চুরির অভিযোগে এলাকার কামরুল শেখ, টুলু শরীফ, মহসিন ও সিরাজ ওই কিশোরকে মারধর করে। পরে ওই দলে আরও কয়েকজন যুক্ত হয়ে দলবদ্ধ নির্যাতন চালায় তার ওপর। মারধরের একপর্যায়ে কিশোর জ্ঞান হারালে মৃত্যু নিশ্চিত করতে বিড়ির আগুনের ছ্যাঁকা দেওয়া হয়। পরে মাথার চুল ন্যাড়া করে ভিডিও করা হয়।

ইমনের বাবা ইসলাম মোল্লা বলেন, গত শনিবার সকালে ব্যবসায়ী আশুতোষ ও রবিনের মাছের ভ্যানে করে আমার ছেলে রামদিয়া বাজারে যায়। বাজারে মাছ নামিয়ে ফেরার পথে মহসিনসহ কয়েকজন তাকে ভ্যান চোর বলে ধাওয়া করে রামদিয়া বড় ব্রিজের কাছে গিয়ে ধরে মারধর করে। পরে মহসিনের সঙ্গে কামরুল শেখ, টুলু শরীফ, সিরাজ যোগ দিয়ে দুই ঘণ্টা ধরে ইমনকে নির্যাতন করে। 

তিনি বলেন, পরে ভ্যানে করে রামদিয়া পুলিশ ফাঁড়ির গেটে নিয়ে প্রকাশ্যে মারধর করে ও কাঁচি দিয়ে মাথার চুল কেটে ভিডিও করে ফেসবুকে ছেড়ে দেয়। খবর পেয়ে ছেলেকে উদ্ধার করতে গেলে তারা আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। তখন ছেলেকে বাঁচাতে লোকজনের কাছে সাহায্য চেয়েও আমি পাইনি। তদন্তকেন্দ্র থেকে পুলিশ এসেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে চলে যায়। তারা আমার ছেলেকে জোরপূর্বক আটকে রাখে। আমি প্রশাসনের কাছে এর বিচার চাই।

বিজ্ঞাপন

পুলিশ ফাঁড়ির সামনে ঘটা ঘটনার কথা নিশ্চিত করে রামদিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাবুল আকতার বলেন, এ ধরনের একটা ঘটনা ঘটেছে। চুরি করতে গিয়ে হাতে-নাতে ধরা পড়ে। তবে নিজামকান্দি ও বেথুড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ফাঁড়িতে কেউ অভিযোগ করেনি।

নিজামকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান নওশের আলী বলেন, বিষয়টি শুনছি যে, ইমন মোল্লা নামে ওই কিশোরকে বেধড়ক মারপিট করা হয়েছে। তবে তাকে ছাড়িয়ে আনার ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা চরম অন্যায় করেছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত কামরুল শেখের সঙ্গে কথা হলে তিনি চুল কাটার কথা স্বীকার করে বলেন, চোরের হিসেব তো চোরের সঙ্গেই করতে হয়। তাকে মারধর করা হয়নি। চড়-থাপ্পড় দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

গোপালগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তারা চরম অন্যায় করেছে। কেউ আইন হাতে তুলে নিতে পারেন না। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |