চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার বড়তাকিয়া রেলস্টেশনের এক কিলোমিটার এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসের ১১ যাত্রী নিহত হয়েছেন। তাদের সবার বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার চিকনদন্ডী ইউনিয়নের আমানবাজার পূর্ব পাশে খন্দকিয়া গ্রামে। একসঙ্গে ১১ জন কিশোর ও যুবকের মৃত্যুতে স্তব্ধ হয়ে গেছে পুরো গ্রাম।
-
আরও পড়ুন... একসঙ্গে চলতেন তারা, একসঙ্গেই মারা গেলেন
মিরসরাই এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসের ১৬ আরোহীর মত্যুর ঘটনায় নিহতদের পরিবার তথা হাটহাজারীর খন্দকিয়া গ্রামে শোকের ছায়া নেমে আসে। এলাকা জুড়ে চলছে শোকের মাতম। নিহতের পরিবারের সদস্য, তাদের আত্মীয়-স্বজন ও এলাকার লোকজনের আহাজারিতে খন্দকিয়া গ্রামের পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।
ঘটনা সত্যতা নিশ্চিত করে চিকনদন্ডী ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান মো. হাসান জামান বাচ্চু বলেন, খৈয়াছড়া ঝরনা দেখে ফেরার পথে ট্রেনের ধাক্কায় আমার এলাকার ১১ জন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৬ জন।
নিহতদের ১০ জনই হাটহাজারীর জুগিরহাট আর অ্যান্ড জে কোচিং সেন্টারের ছাত্র-শিক্ষক। তাদের বাড়ি হাটহাজারীর আমানবাজার খন্দকিয়া গ্রামে।
নিহতরা হলেন- আর অ্যান্ড জে কোচিং সেন্টারের শিক্ষক মোস্তফা মাসুদ রাকিব (২৮), জিয়াউল হক সজীব (২৮), রিদোয়ান চৌধুরী (৩১) ও ওয়াহিদুল আলম জিসান (৩২)। শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষার্থী হিশাম (১৮), আয়াত (১৮), মারুফ (১৭), তাসফির (১৮) ও হাসান (১৯)। নিহত অন্যজন হলেন- মাইক্রোবাস চালক গোলাম মোস্তফা (৩৫), তিনি হাটহাজারী উপজেলার চিকনদণ্ডী এলাকার বাসিন্দা।
-
আরও পড়ুন... ‘বাবা আমি চলে যাব, আমার জন্য দোয়া করিয়েন’
আহতরা হলেন- তাছমীর পাভেল (১৬), মো. মাহিম (১৮), মো. সৈকত (১৮), তানভীর হাসান হৃদয় (১৮), মো. ইমন (১৯) ও মাইক্রোবাসের চালকের সহকারী তৌকিদ ইবনে শাওন (২০)। তারা চমেক হাসপাতালের ২৪ ও ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী মহানগর প্রভাতি ট্রেনটি দুপুর দেড়টার দিকে ওই লেভেলক্রসিং পার হওয়ার মুখে পর্যটকবাহী মাইক্রোবাসটি লাইনে উঠে পড়ে। ট্রেনটি মাইক্রোবাসটিকে ধাক্কা দিলে তা ট্রেনের ইঞ্জিনের সঙ্গে আটকে যায়। ওই অবস্থায় মাইক্রোবাসটিকে প্রায় পৌনে এক কিলোমিটার পথ টেনে নিয়ে বার তাকিয়া স্টেশনের অদূরে থামে ট্রেনটি।
এরমধ্যেই মাইক্রোবাসের চালকসহ ১১জন মারা যান। স্থানীয়রা ছুটে এসে হতাহতদের উদ্ধার শুরু করে। পরে ফায়ার সার্ভিস, রেলপুলিশ ও থানা পুলিশের সদস্যরা এসে উদ্ধার কাজে যোগ দেন। আহতদের নেওয়া হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
-
আরও পড়ুন... হাস্যোজ্জ্বল ছবিটি এখন কেবল স্মৃতি
চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দীন গণমাধ্যমকে জানান, পরিবারের লোকজনের আবেদনের প্রেক্ষিতে এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।