ঢাকাশনিবার, ০৩ মে ২০২৫, ২০ বৈশাখ ১৪৩২

মামলা নেই তবুও তিন বছর বন্দি কারাগারে

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

সোমবার, ০১ আগস্ট ২০২২ , ১১:১৭ পিএম


loading/img
ছবি : সংগৃহীত

মামলা নেই, নেই আদালতের সাজা। মাত্র জিডির ওপর ভর করে প্রায় তিন বছর ঝিনাইদহ জেলখানায় বন্দি রয়েছেন এক প্রতিবন্ধী। তার নাম, বাড়ি ও জন্ম পরিচয় এই তিন বছরেও রয়েছে অজানা। 

বিজ্ঞাপন

এদিকে গতকাল রোববার (৩১ জুলাই) জেলখানায় বন্দি ওই প্রতিবন্ধী পরিচয় সনাক্ত করতে উদ্যোগ নেন ঝিনাইদহের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বৈজয়ন্ত বিশ্বাস। 

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ সদর থানার তৎকালীন এস আই মো. ইউনুস আলী গাজী ২০১৯ সালের ১৪ নভেম্বর ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নগরবাথান এলাকা থেকে অজ্ঞাতনামা ওই প্রতিবন্ধীকে স্থানীয় লোকজনের হেফাজত থেকে উদ্ধার করে নিরাপত্তা হেফাজতের জন্য আদালতে প্রেরণ করেন। ৩১ আগস্ট ২০২০ সালে আদালতের নির্দেশে ওই ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত হতে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগে চিঠি প্রেরণ করেন।

বিজ্ঞাপন

২০২০ সালের ১৯ নভেম্বর জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগ থেকে আদালতকে জানানো হয়, সাধারণ কাগজে সংগৃহীত আঙুলের ছাপ দিয়ে সঠিক পরিচয় সনাক্ত করা সম্ভব নয়। তবে ডিজিটাল ডিভাইজের মাধ্যমে ডাবলুউি এস কিউ ফরম্যাটে আঙুলের ছাপ নেওয়া হলে তা সঠিকভাবে পরীক্ষা করা সম্ভব।

প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. ইয়াছিন আলী নাম-ঠিকানা যাচাই সংক্রান্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির চেহারা অঙ্গভঙ্গি অনেকটা রোহিঙ্গাদের মতো। ঝিনাইদহের জেল সুপার এ বিষয়ে আদালতকে অবহিত করেন।

অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি কারাগারে আসার পর থেকে তার নাম-ঠিকানা বলতে পারেন না। তার বিরুদ্ধে মামলা নেই। শুধুমাত্র সাধারণ ডায়েরি মূলে তিনি ২ বছর ৮ মাস কারাগারে বন্দি রয়েছেন। 

বিজ্ঞাপন

ঝিনাইদহ অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বৈজয়ন্ত বিশ্বাস আদেশে উল্লেখ করেন, নাম ঠিকানাবিহীন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিটি একজন বুদ্ধি ও বাক প্রতিবন্ধী। বিনা বিচারে কাউকে জেলহাজতে আটক রাখা ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার সংক্রান্ত নীতিমালার পরিপন্থী। অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে অবিলম্বে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দিতে তার নাম-ঠিকানা উদঘাটন করা প্রয়োজন। এ কারণে ওই ব্যক্তিকে ঝিনাইদহ নির্বাচন অফিসে নিয়ে যথাযথ আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করে ম্যাচিং পূর্বক আদেশ প্রাপ্তির ৩ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

এ ছাড়া টেকনাফ, উখিয়া ও ভাসানচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের আদেশ প্রাপ্তির তারিখ থেকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে নিজ নিজ এখতিয়ারাধীন অঞ্চলে অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে উক্ত ব্যক্তির ছবি যাচাই-বাছাই পূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেন।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাড আজিজুর রহমান বলেন, একজন ব্যক্তি বিনা অপরাধে কোনোভাবেই জেলখানায় বন্দি থাকতে পারে না। এটা সভ্য সমাজে অমানবিক। 

তিনি বলেন, আদালত যে নির্দেশনা দিয়েছেন তা সঠিক। 

ঝিনাইদহ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুস ছালেক বলেন, আদালতের কোনো নির্দেশনা এখনও তিনি পাননি। লিখিত নির্দেশনা পেলে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |