ঢাকাশনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকা, অতঃপর...

টাঙ্গাইল (উত্তর) প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

বুধবার, ১২ অক্টোবর ২০২২ , ০৫:১০ এএম


loading/img

গোপালপুরে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকাকে বাড়িতে এনে অমানুষিক নির্যাতন ও শ্লীলতাহানি ঘটানোর অভিযোগে প্রেমিকের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী। 

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) বিকেলে টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা পরিষদ চত্বর ও হাসপাতাল ঘেরাও করে বিক্ষোভ কর্মসূচি করে উত্তেজিত জনতা।

জানা যায়, দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার কেশবপুর গ্রামের আফজাল হোসেনের মেয়ে ফৌজিয়া আকতার তানিয়ার সাথে গোপালপুর উপজেলার সূতি নয়াপাড়া গ্রামের সুরুজ মিয়ার পুত্র বরাতুল ইসলাম শিমুলের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। তারা দুজনে গাজীপুর একটি গার্মেন্টেসে চাকরি করত। 

বিজ্ঞাপন

পরিনয়কে বিয়েতে রুপান্তরিত করার উদ্দেশ্যে বাবা-মার মতামত নেওয়ার জন্য শিমুল গত ২৯ সেপ্টেম্বর তানিয়াকে গ্রামের বাড়ি নিয়ে আসে। কিন্তু বাবা-মা রাজি না হওয়ায় বিয়ে হয়নি। শিমুলের বাড়িতে অবস্থান করতে থাকে তানিয়া। 

গত ১ অক্টোবর গ্রামে একটি সালিশী বৈঠকে শিমুলকে বিয়ের চাপ দিলে সে বাবা-মাসহ বাড়ি থেকে গাঢাকা দেয়। কিন্তু তানিয়া বিয়ে না করে কর্মস্থলে ফিরে যেতে অস্বীকার করেন।

সূতি নয়াপাড়া গ্রামের হাবেল উদ্দিন জানান, এক সপ্তাহ ধরে খেয়ে না খেয়ে তানিয়া ওই বাড়িতে অবস্থান করছিল। মঙ্গলবার সকাল নয়টার দিকে গোপালপুর থানা পুলিশ তানিয়ার খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য ওই বাড়িতে গেলে শিমুলের মামা এরশাদ আলী, মামাতো ভাই শাকিল, দুই খালা জল্পনা খাতুন ও আল্পনা খাতুন মিলে তানিয়াকে বেদম মারপিট করার পর চুলের মুঠি ধরে টেনে হিঁচড়ে ঘর থেকে বের করে আনে। এতে তার পরনের কাপড় ছিড়ে যায়।

বিজ্ঞাপন

পৌর কাউন্সিলর শামছুল আলম জানান, তানিয়ার চিৎকারে এলাকাবাসীরা ছুটে গিয়ে পুলিশের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করেন।মারপিট ও নির্যাতনের ঘটনায় এলাকাবাসী ক্ষোভে ফুঁসে উঠে। পরে সহস্রাধিক গ্রামবাসী এ নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু করে। তারা আহত তানিয়াকে একটি রিকসাভ্যানে উঠিয়ে বিক্ষোভ মিছিলসহ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় ঘেরাও করেন।

সূতি নয়াপাড়া গ্রামের রাসেল মিয়া অভিযোগ করেন, উপজেলা ভাইসচেয়ারম্যান মীর রেজাউল হক ছেলে পক্ষ নিয়ে প্রশাসনিক পর্যায়ে নানাভাবে দেনদরবার করায় ছেলেপক্ষ আপোষ রফায় না গিয়ে উগ্র হয়ে উঠে। পরিণতিতে এ নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। তিনি এ নির্যাতনের দায় এড়াতে পারেন না।

মীর রেজাউল জানান, তিনি বরাবরই এটি মীমাংসার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ছেলেপক্ষ রাজি না হওয়ায় বিষয়টি সমাধান হয়নি।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক তাপস সাহা জানান, ভিক্টিমের শরীরে নির্যাতনের অনেক চিহ্ন রয়েছে। তার শরীর খুবই দুর্বল। তবে আশঙ্কামুক্ত। এ ব্যাপারে সন্ধ্যায় নারী নির্যাতানের ধারায় গোপালপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

এ বিষয়ে গোপালপুর থানার ওসি মো. মোশারফ হোসেন জানান, লিখিত অভিযোগের বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |