হাতে ফুলের ডালা, চোখে জল নিয়ে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র আরফানুল হক রিফাতকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানালো নগরবাসী।
শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) জুমার নামাজের পর কুমিল্লা কেন্দ্রীয় ঈদগা মাঠে জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। নামাজে অংশগ্রহণের জন্য সব শ্রেণিপেশার মানুষের ঢল নামে। পরে টমসমব্রীজ কবরস্থানে মরদেহ দাফন করা হয়।
জানাজায় নামাজে উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার, সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক এমপি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রী কার্যনির্বাহী সংসদদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ও কুমিল্লা দাউদকান্দি তিতাস আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা মফিজুর রহমান বাবলু, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান, পুলিশ সুপার আবদুল মান্নানসহ অন্যান্যরা।
জানাজার নামাজে ইমামতির দায়িত্ব পালন করেন মেয়র আরফানুল হকের একমাত্র ছেলে এহতেশামুল হক রাইয়ান।
এর আগে শুক্রবার দিবাগত ভোর ৪টায় সিঙ্গাপুর থেকে নিজ বাসভবনে নিয়ে আসা হয় মেয়র রিফাতের মরদেহ। সকাল ৯টায় সিটি করপোরেশনে মরদেহটি নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কাউন্সিলর, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তাদের মেয়রকে শেষবারের শ্রদ্ধা জানান।
পরে মরদেহটি নিয়ে যাওয়া হয় নগরীর কান্দিরপাড়স্থ মহানগর আওয়াম লীগ কার্যালয়ে। সেখানে নেওয়ার পর দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহকর্মী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদর আসনের সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার প্রথমে ফুলের ডালা দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পার্টি অফিসে আগে থেকে হাজির হওয়া আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সহস্রাধিক কর্মীরা দীর্ঘদিনের প্রিয় নেতাকে হারিয়ে শোকে বিহব্বল হয়ে পড়েন। এ সময় সকল শ্রেণিপেশার মানুষ উপস্থিত হয়ে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
৬৫ বছর বয়সী আরফানুল হক রিফাত দীর্ঘদিন ধরে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। গেল ২০২২ সালের ১৬ জুন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন।
পরিবারসূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন তিনি শ্বাসকষ্টসহ শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন তিনি। চলতি সপ্তাহের প্রথম দিকে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। তার ফুসফুসে সংক্রমণ দেখা দেয়। চিকিৎসার জন্য প্রথমে তাকে নগরীর সিডিপ্যাথ হসপিটালে পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হসপিটালে ভর্তি করানো হয়।
গেল সোমবার অবস্থার অবনতি হলে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুর মাউন্ট এলিজাবেথ হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয়। বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী এক ছেলে দুই মেয়েসহ অসংখ্য নেতাকর্মী ও গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।