পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত
সাপ্তাহিক ছুটি উপলক্ষে ভ্রমণপিপাসু হাজার হাজার পর্যটকের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠছে সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে দীর্ঘদিন পর্যটক শূন্যতায় মন্দাভাব কাটিয়ে সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা এখন পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত।
শীতের তীব্রতা কাটিয়ে আগত এসব পর্যটকদের আনন্দ উচ্ছাসে মুখরিত ১৮ কিলোমিটার সৈকতসহ সকল দর্শনীয় স্থান। সমুদ্রের নোনা জলে গাঁ ভাসিয়ে আনন্দ উন্মাদনায় মেতেছেন অনেকেই। কেউ বেঞ্চে বসে উপভোগ করছেন চেনা প্রাকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য। ঘুরছেন ঘোড়ায় কিংবা সৈকতের ওয়াটার বাইকে।
সরেজমিনে দেখা যায়, অধিকাংশ হোটেল-মোটেলের কক্ষ ইতোমধ্যে বুকিং হয়ে গেছে। বিক্রি বেড়েছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। সাপ্তাহিক সরকারি ছুটি দুদিন হওয়ায় হাজার হাজার পর্যটকদের আগমন ঘটেছে বলে মনে করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। পর্যটকদের নিরাপত্তায় সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে ট্যুরিস্ট পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে।
সমুদ্র সৈকতে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় সূর্যাস্ত অবলোকনের পর পর্যটকরা ছুটে যান রাখাইনদের আদি কুয়া অথবা রাখাইন পল্লীতে। কুয়াকাটার জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন রয়েছে নজরকাড়া প্যাগোডা। এই প্যাগোডা তথা শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধবিহার-সংলগ্ন বেড়িবাঁধের পাশে রয়েছে ২০০ বছরের প্রাচীনতম নৌকা। রাখাইন মহিলা মার্কেট, মিশ্রিপাড়ায় অবস্থিত এশিয়ার সর্ববৃহৎ সীমা বৌদ্ধ বিহার। ইকোপার্ক, লেম্বুরচর, শুটকিপল্লী, সমুদ্রপথে চর বিজয়, ফকিরহাটসহ বিভিন্ন আকর্ষণীয় স্থান। পর্যটকদের বাড়তি বিনোদনে প্রস্তুত রয়েছে ট্যুরিস্ট বোট, স্পিডবোট। কেউ বিচে ছাতার নিচে বসে সাগরের জল আর সূর্য রশ্মির রঙিন খেলায় মেতে ওঠা অপরূপ দৃশ্য অবলোকন করে।
ঢাকা থেকে আসা হাবিবুর রহমান রানা বলেন, একই স্থানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত উপভোগ করার দৃশ্য একমাত্র কুয়াকাটায় দেখা সম্ভব, যা সত্যিই বিমোহিত করার মতো।
কুয়াকাটার আবাসিক হোটেল সি প্যালেসের ম্যানেজার রুবেল বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে গত বছর তেমন ট্যুরিস্ট আসেনি। সাপ্তাহিক ছুটি উপলক্ষে আমাদের হোটেলের সকল রুম বুকিং হয়েছে এবং অন্যান্য হোটেলেও বেশ পর্যটক রয়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী আ. সোবাহান বলেন, এ বছরে আজকেই সবচেয়ে বেশি পর্যটকের আগমন ঘটেছে। এভাবে পর্যটক আসলে আমরা পেছনের লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারব।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক মো. রিমন বলেছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা কমে যাওয়ায় পর্যটক বেড়েছে, তবে শীত কমলে আরও বাড়বে।
কুয়াকাটায় হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মোতালেব শরীফ বলেন, এ বছরে আজকে ভাল পর্যটকের আগমন ঘটেছে। প্রায় হোটেলে রুম বুকিং রয়েছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের পরিদর্শক হাসনাইন পারভেজ বলেন, আমরা সর্বদা নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছি। কুয়াকাটার বিভিন্ন স্পটগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন