পানির এলাকায় সুপেয় পানির অভাব
‘পানির জন্য উপকূলের দুঃখ বারো মাস, সুপেয় পানির অভাব আর লবনাক্ততায় সর্বনাশ’ স্লোগানকে সামনে রেখে বরগুনার পাথরঘাটায় খালি কলসি নিয়ে ‘কলসি বন্ধন’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (২২ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে বিষখালী নদী সংলগ্ন চরলাঠিমারা গ্রামের একটি মাঠে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), পাথরঘাটা উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের আয়োজনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রায় ৩ শতাধিক স্থানীয় বাসিন্দাসহ সিসিডিবি, এনএসএস, বাংলাদেশ বন্ধু ফাউন্ডেশন, চরলাঠিমারা, সিসিআরসিসহ ৩০টি বেসরকারি, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অংশগ্রহণ করে। এ সময় ‘আজকের শিশু আগামীর ভবিষ্যৎ’ লবনাক্ত এবং খারাপ পানি ব্যবহার করে ভবিষ্যৎ জীবন ঝুঁকিতে ফেলতে চায়না এমন চিন্তা করে একাধিক শিশু খালি কলসি নিয়ে প্রতীকী প্রতিবাদ করে।
এতে বক্তব্য রাখেন পাথরঘাটা উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক সাংবাদিক ও গবেষক শফিকুল ইসলাম খোকন, বাংলাদেশ বন্ধু ফাউন্ডেশনের সহকারী ম্যানেজার মোহাম্মদ মামুনুর রশিদ, সিসিডিবির প্রকল্প সমন্বয়কারী রতন মজুমদার, সমাজসেবক নয়ন আহমেদ, স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হোসেন, সোহরাব হোসেন প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, পাথরঘাটায় পর্যাপ্ত সুপেয় পানি পাওয়া যায় না। এখানকার মানুষের মধ্যে নিয়মিত দেখা যায় পানির জন্য হাহাকারের চিত্র। এক কলসি পানির জন্য তাদের পাড়ি দিতে হয় কয়েক গ্রাম। তারপরেও অনেক সময় খাওয়ার মতো পানি না পেয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়তে হয়। প্রতি বছরই বিভিন্ন এলাকায় মিঠা পানির স্তর নিচে নেমে যায়। এতে সুপেয় পানির অভাব দিন দিন আরও বাড়ছে।
তারা আরও বলেন, এখানে শুকনো মৌসুমে পানির সংকট তীব্র থাকে। বিশেষ করে পাথরঘাটায় গভীর নলকূপ স্থাপন সম্ভব না হওয়ায় এখনকার মানুষের দুঃখের যেন শেষ নেই।
সাংবাদিক ও গবেষক শফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, উপকূলের মানুষের পানির দুঃখ ১২ মাস। উপকূলের পানির কান্না কেউ শুনতে পায় না। প্রকৃতিগতভাবেই এখানে পানির অভাব থাকে তাই বিকল্প পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে। যদিও সরকারি এবং বেসরকারিভাবে পানি সংরক্ষণের জন্য পানির ট্যাংক দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এলাকার নদ-নদীর পানি রিফাইন করে স্থায়ীভাবে পানি সরবরাহ ও সংরক্ষণসহ নতুন নতুন উপায় বের করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আজকের শিশু আগামীর ভবিষ্যৎ, ছোট থেকেই শিশুদের সুপেয় পানির মাধ্যমে পানিবাহিত রোগ থেকে মুক্ত রাখতে হবে। তা না হলে বংশ পরম্পরায় উপকূলের মানুষ রোগ-শোক নিয়ে জীবন চলতে হবে।
মন্তব্য করুন