কবে কিভাবে দেশে ফিরবেন নাবিকরা
সোমালি জলদস্যুদের জিম্মি দশা থেকে বাংলাদেশ সময় শনিবার রাত ৩টার দিকে ৩২ দিন পর মুক্তি পায় এমভি আব্দুল্লাহ ও এর ২৩ নাবিক।
নাবিকদের মুক্তি মিললেও দেশে আসতে কমপক্ষে দশদিন লাগতে পারে। এমভি আবদুল্লাহ দুবাই পৌঁছবে ১৯ এপ্রিল। সেখানে কিছু কাজ শেষ করতে আরও চার-পাঁচদিন সময় লাগবে।
রোববার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে জাহাজটির মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসআর শিপিংয়ের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে এসআর শিপিংয়ের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক(ডিএডি) শাহরিয়ার জাহান রাহাত বলেন, দুবাইয়ে পৌঁছানোর পর সব ফরম্যালিটিস শেষ করে ৪-৫ দিন পর নাবিকরা দেশের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন। তবে তারা বিমানে নাকি জাহাজে দেশে ফিরবেন তা ঠিক হয়নি।
মুক্তির পর রোববার (১৪ এপ্রিল) দুপুর পৌনে ২টায় নিজের ফেসবুক আইডি থেকে প্রথম পোস্ট দেন জাহাজটির চিফ অফিসার আতিকউল্লাহ খান।
মুক্তির পর নিজেদের আনন্দ আর উচ্ছ্বাসের কয়েকটি ছবি পোস্ট করে তিনি লিখেন, আলহামদুলিল্লাহ। অবিশ্বাস্য প্রচেষ্টার জন্য এসআর শিপিংকে ধন্যবাদ। বন্ধু, পরিবার ও সকল শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা যারা পুরো যাত্রায় আমাদের জন্য প্রার্থনা করেছেন। ধন্যবাদ ইইউএনএভিএফওআর অপারেশন আটলান্টা। ধন্যবাদ বাংলাদেশ। লাভ ইউ অ্যান্ড মিসিং ইউ বাংলাদেশ।
এদিকে মুক্তির পর এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি সোমালিয়া থেকে দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা করেছে বলে মালিকপক্ষ জানিয়েছে।
বিকল্প নাবিকদের বিষয় জানতে চাইলে সংবাদ সম্মেলনে এসআর শিপিং এর সিইও মেহেরুল করিম বলেন, বিকল্প ক্রুও রেডি করা হয়নি। কারণ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকরা কিভাবে ফিরবেন এখনো সে সিদ্ধান্ত হয়নি। তাদের সিদ্ধান্ত অনুসারে বাকি পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এসআর শিপিং এর সিইও বলেন, এমভি জাহান মনি গ্রিসের পথে পণ্য নিয়ে যাচ্ছিল। মুক্তির পর নাবিকরা জাহাজ নিয়ে কাতারে যায়। কিন্তু পণ্য ইউরোপে খালাসের কথা ছিল। তাই বিকল্প নাবিকদের যেতে হয়। এমভি আবদুল্লাহর পণ্য দুবাইতেই খালাস হবে। সেখান থেকে জাহাজেরও দেশে ফেরার কথা।
তিনি আরও বলেন, এখন নাবিকরাই ঠিক করবেন তারা কিভাবে দেশে ফিরবেন।
এর আগে সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে এসআর শিপিংয়ের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার হাসান রাহাত বলেন, বিষয়টি সেনসেটিভ হওয়ায় কৌশলগত কারণে এতদিন সামনে আসিনি। নববর্ষ এসেছে, নাবিকদের মুক্ত করা গেছে এটা আমাদের জন্য অনেক আনন্দের।
তিনি আরও বলেন, গত ১২ মার্চ অস্ত্রের মুখে জলদস্যুরা জাহাজটি আটক এবং নাবিকদের জিম্মি করে। এরপর থেকে নাবিকদের সেফটি নিয়ে টেনশনে ছিলাম।
এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে কেন আর্মড গার্ড ছিল না জানতে চাইলে শাহরিয়ার বলেন, জাহাজটি যে পথ দিয়ে যাচ্ছিল তা হাইরিস্ক এরিয়ার ডবল রেঞ্জের বাইরে ছিল। ২০০ নটিক্যাল মাইল হচ্ছে হাই রিস্ক এরিয়া। জাহাজ ৬০০ নটিক্যাল মাইল দিয়ে চলছিল।
প্রসঙ্গত, গত ১২ মার্চ দুপুরে ভারত মহাসাগরে সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়ে বাংলাদেশের কবির গ্রুপের এসআর শিপিংয়ের মালিকানাধীন জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। মোজাম্বিক থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাচ্ছিল জাহাজটি। এর ২৩ নাবিকের সবাই বাংলাদেশি।
মন্তব্য করুন