২০ লাখ টাকার ডাকঘরে আইসক্রিম বিক্রি করছেন পোস্টমাস্টার
যোগাযোগের প্রাচীন ও প্রয়োজনীয় মাধ্যম পোস্টঅফিস বা ডাকঘর ক্রমেই জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। ডাকঘরের সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সরকারের নানা চেষ্টা থাকলেও এর সুফল পাচ্ছেন না গ্রামের সাধারণ মানুষ।
ভোলার আলীনগর ও চরসামমাইয়া ইউনিয়ন সীমানায় সুকদেব ডাকঘর। ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ডাকঘর ভবন নির্মাণ করা হয়। সুদৃশ্য এই ডাকঘর ভবন এখন ব্যবহার হচ্ছে, পোস্টমাস্টারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে। ডাকঘর ভবনের দুটি কক্ষেই রয়েছে বিশাল আকারের ডিপফ্রিজ। যার মধ্যে সংগ্রহ করা হচ্ছে আইসক্রিম। জনসেবার পরিবর্তে সেখানে চলছে আইসক্রিম কেনাবেচা।
অফিসে নোটিশ টাঙানো রয়েছে অফিসের সময়সূচি সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত। এমন সময়সূচি দৃশ্যমান থাকলেও মানুষ এর সুফল থেকে বঞ্ছিত। পোস্টমাস্টার মনিরুল ইসলাম ব্যবসায়িক কাজে ব্যস্ত থাকেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। ১২টায় ওই পোস্ট অফিসে গিয়ে দেখা যায় দুটি কক্ষে তালা ঝুলছে। ডাকটিকিট নেওয়ার স্থানটিতে ধুলাবালুতে ঢাকা।অফিসে পোস্টমাস্টার না থাকায় রেভিনিউ স্ট্যাম্প নিতে এসে ফিরে যান কয়েকজন।
পোস্টমাস্টার মো. মনিরুল ইসলামের ছেলে জানান, তার বাবা বাজারে দোকানদারি করছেন। পোস্ট অফিসের ভেতর রাখা আইসক্রিম ফ্রিজ দোকানের। দুপুর ১২টায় পোস্টমাস্টারকে তার মুঠোফোনে কল দিলে জানান, রোগী দেখতে তিনি ভোলা হাসপাতালে গেছেন। ফিরতে দেরি হবে।
আইসক্রিম ও ফ্রিজের বিষয়ে মনিরুল জানান, ১৮ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল দিতে হচ্ছে। তাই তার ব্যবসার কাজে ফ্রিজ রেখেছেন। পাশে তার দোকানো রয়েছে।
ওই অফিসে সংযুক্ত ডাক পিয়ন অমল কৃষ্ণ দে জানান, চিঠি বা প্যাকেট থাকলে তিনি আসেন একদিন। আইসক্রিমসহ ফ্রিজ পোস্টমাস্টার রেখেছেন।
জেলার প্রধান ডাকঘরের পোস্টমাস্টার মো. কামরুল আহসান বিষয়টি শুনে অবাক হন। তিনি সদ্য যোগদান করেছেন উল্লেখ করে বলেন, পোস্ট অফিসের সেবা সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করেছি। সেখানে দায়িত্ব পালন না করলে, তা সত্যিই দুঃখজনক। মনিরুল ইসলাম যে কাজ করছেন, তা সঠিক নয়। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও উল্লেখ করেন এই কর্মকর্তা।
ওই দপ্তরের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. এমরান হোসেন জানান, সরকারি অফিস কারও ব্যক্তিগত কাজে বা ব্যবসা সেন্টার হতে পারে না। তিনি জরুরি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন।
মন্তব্য করুন