নওগাঁয় শোভা ছড়াচ্ছে সারি সারি তাল গাছ
ছাত্র জীবনে বন্ধুরা মিলে রোপণ করেছিলেন তাল গাছের চারা। বিশ বছর পর রাস্তার দুপাশে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে সেই তাল গাছ। বর্তমানে এই গাছের ছায়াতলে পথিক জুড়ায় প্রাণ। স্থানীয় চেয়ারম্যান আরিফুর রহমানের উদ্যোগে প্রায় ২০ বছর আগে শহরাই গ্রামের কিছু যুবক রোপণ করেছিলেন প্রায় ৬৪০টি তাল গাছ। বর্তমান সময়ে তাদের দাবি সড়কের পাশে পথিকের বসবার জন্য প্রয়োজন মানসম্মত বসার সিট।
জানা গেছে, নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার রাইগা ইউনিয়নের রাজবাড়ি মোড় থেকে শহরাই গ্রাম পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে প্রায় আড়াই কিলোমিটার রাস্তাজুড়ে সারি সারি তাল গাছ। ইতোমধ্যে তালগাছকে কেন্দ্র করে এলাকার সৌন্দর্য ফুটে ওঠায় পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে সড়কটি। ১২ ফিট থেকে ২৪ ফিট রাস্তা প্রসস্তকরনেও তালগাছ গুলো না কাটায় প্রশংসা কুড়চ্ছে সড়ক বিভাগ।
আরিফুর রহমান স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এবং রাইগা ডিগ্রি কলেজের প্রিন্সিপাল। ছাত্রজীবনে তার নিজ গ্রাম শহরাইের কিছু বন্ধু বান্ধবদের সঙ্গে নিয়ে বজ্রপাত থেকে রক্ষায় রোপণ করেছিলেন তালের চারা। সেই চারাগুলো আজ মাথাতুলে দাঁড়িয়ে আছে সড়কের দুইপাশে। শহরাই তাল পার্ক নামে ইতোমধ্যে ব্যাপক পরিচিত লাভ করেছে সড়কটি।
আরিফুর রহমান জানান, শুরুর দিকে নিজগ্রামের সড়কের পাশে তাল বীজ রোপণ করলেও স্থানীয়দের উৎসাহে ধীরে ধীরে মূল সড়কের পাশে তারা রোপণ করেছিলেন তাল বীজ। শুধু এই সড়কে নয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেরণায় রাইগা ইউনিয়নে প্রায় সাড়ে ১২ হাজার বিভিন্ন জাতের গাছ লাগিয়েছেন তিনি। বজ্রপাত থেকে রক্ষায় এই তালগাছগুলো ব্যাপক সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
তিনি দাবি জানান, এই সড়কটিকে শহরাই তাল পার্ক হিসেবে প্রশাসন থেকে ঘোষণা প্রদানের। এ ছাড়াও তালগাছকে কেন্দ্র করে স্থানীয় পর্যটন শিল্পও আরও বেগবান করার দাবি জানান তিনি।
স্থানীয়রা জানান, মাঠে কাজ করার পর সড়কের পাশে তালগাছের নিচে তারা বিশ্রাম নেন। কাজ শেষে দুপুরের খাবার খান গাছের নিচে বসে। বর্তমানে বিশ্রাম নেবার জন্য পথিকেরা ঘাসে বসে বিশ্রাম নিয়ে থাকে। যদি প্রশাসনের পক্ষ থেকে বসবার জন্য ছিটের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয় তাহলে হয়ত তাদের পরিশ্রান্তি দূর হবে বলে মনে করেন তারা। অতি স্বত্বর সড়কটিকে শহরাই তাল পার্ক হিসেবে ঘোষণা করার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানান তারা।
এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুল হক জানান, উপকারী তালগাছগুলো না কেটে স্থানটিতে সড়ক প্রসস্তকরণ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। প্রসস্তকরণ বাজেটে সড়কের পাশে বসার ব্যবস্থার কোনো বাজেট না থাকায় তা শুধু প্রসস্তকরণ করা হয়েছে। তবে স্থানীয়দের দাবি মেনে নিয়ে নতুন বাজেটে সড়কটির পাশে নানান উন্নয়নমূলক কাজ করা হবে জানান সড়ক বিভাগের এই কর্মকর্তা।
তালগাছ রোপণে স্থানীয় চেয়ারম্যান এবং রক্ষায় সড়ক বিভাগ প্রশংসা কুড়চ্ছে সংশ্লিষ্টদের। শুধু সৌন্দর্য বর্ধন নয় বজ্রপাতের মত শক্তিশালী দুর্ঘটনা থেকে রক্ষায় এর ভূমিকা অপরিসীম। তাই পরিবেশ রক্ষায় সড়কের পাশে তাল গাছে সারি এটি দৃষ্টান্ত বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
মন্তব্য করুন