‘পাওনা টাকা চাওয়ায় মনিরুলকে গুলি করেছে কাওছার’

আরটিভি নিউজ

সোমবার, ১০ জুন ২০২৪ , ০৫:০৫ এএম


‘পাওনা টাকা চাওয়ায় মনিরুলকে গুলি করেছে কাওছার’
ফাইল ছবি

‘কাওছার নামে যে পুলিশ সদস্য মনিরুলকে গুলি করেছে, তার কাছে হাওলাতের (ধার) টাকা পাওনা ছিল মনিরুলের। টাকা চাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে এ কাজ করে কাওছার।’

বিজ্ঞাপন

রোববার (৯ জুন) রাজধানীতে সহকর্মীর গুলিতে নিহত পুলিশ কনস্টেবল মনিরুল হকের (২৭) ভগ্নিপতি আনিছুর রহমান এ দাবি করেন।

এ কথা বলার পরই ‘প্রমাণ ছাড়া এসব বলা ঠিক হবে না’ বলে উপস্থিত লোকজন আনিছুরকে থামিয়ে দেন। পরে আনিছুর আর এ বিষয়ে বিস্তারিত বলেননি।

বিজ্ঞাপন

এদিন মনিরুলের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার বিষ্ণুপুরে যেয়ে দেখা যায় সেখানে শোকের মাতম চলছে।

মনিরুলের স্ত্রী তানিয়া আক্তার তন্বী দুই বছরের শিশুসন্তান তাকিকে জড়িয়ে ধরে বিলাপ করে বলছেন, ‘আর কিছু চাই না, আমার স্বামীরে ফিরিয়ে দাও।’

আর মনিরুলের দুই বছর বয়সী ছেলে তাকি বাড়িতে একসঙ্গে এত মানুষ দেখে একজনের কোল থেকে অন্যজনের কোলে ঘুরছে।

বিজ্ঞাপন

মনিরুলের বৃদ্ধা মা দেলোয়ারা হক ছেলের শোকে কান্নায় বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। দিনভর কেঁদে চোখের জল ফুরিয়ে গেছে। আর কান্নার শক্তি নেই। এখন বিছানায় শুয়ে শুধু নীরবে চেয়ে রয়েছেন। তার মুখে কোনো ভাষা নেই।  

মনিরুলের শোকাহত পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে প্রতিবেশী ও স্বজনেরা এসে ভিড় করেছেন। কারও মুখে কোনো ভাষা নেই।

জানা গেছে, নিহত মনিরুল বিষ্ণুপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত শামসুল হকের ছেলে। তারা তিন ভাই তিন বোন। সবার ছোট মনিরুল। ২০১৪ সালে নেত্রকোনার আঞ্জুমান সরকারি উচ্চ থেকে এসএসসি পাস করেন তিনি। পরে ময়মনসিংহে একটি বেসরকারি পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়ে ৪র্থ সেমিস্টার পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। এরমধ্যে ২০১৬ সালের শেষের দিকে পুলিশে যোগ দেন। তিন বছর আগে জেলার পূর্বধলা উপজেলায় বিয়ে করেন মনিরুল। তাঁর স্ত্রীর নাম তানিয়া আক্তার তন্বী। তাকি নামে তাঁদের দুই বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। 

মনিরুলের বড় ভাই আমিনুল হক মিঠু বলেন, ‘লাশ কখন আসবে জানি না। মনিরুল আমাদের সবার ছোট। সে আমাদের সবার আদরের। গত রোজায় বাড়ি এসেছিল। ছুটি বেশি না থাকায় এসে দ্রুত চলে গেছে। সোমবার (১০ জুন) ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসার কথা ছিল। একসঙ্গে সবাই মিলে ঈদ করার কথা ছিল। কিন্তু আসবে লাশ হয়ে। এ দুঃখ সইবার মতো নয়।’

প্রসঙ্গত, শনিবার (৮ জুন) রাজধানীর গুলশান থানাধীন বারিধারা ডিপ্লোমেটিক জোন এলাকার ফিলিস্তিন দূতাবাসের নিরাপত্তাকর্মীদের ডিউটিবুথের সামনে ডিউটিরত কনস্টেবল মনিরুল ইসলামকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত কাউসার অপর এক পুলিশ সদস্য আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission