ঢাকাশুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ১৯ বৈশাখ ১৪৩২

দৌলতদিয়ায় পদ্মায় বেড়েছে পানি, ভাঙনঝুঁকিতে ফেরিঘাট

রাজবাড়ী প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪ , ১১:৪২ এএম


loading/img
ছবি : সংগৃহীত

পদ্মা নদীর পানি বাড়ায় ভাঙন দেখা দিয়েছে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকায়। গত এক সপ্তাহের ভাঙনে ৭ নম্বর ঘাট এলাকায় প্রায় ২০০ মিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে দৌলতদিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ৬ ও ৭ নম্বর ফেরিঘাটের পাশাপাশি ঘাট সংলগ্ন দোকান পাটসহ প্রায় ৩ শতাধিক পরিবারের বসতবাড়ি ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ফলে ভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছেন পদ্মা পাড়ের বাসিন্দারা। 

বিজ্ঞাপন

রোববার (৭ জুলাই) সকালে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নদীতে পানি ও স্রোত বেড়ে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকার বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে ৬ ও ৭ নম্বর ফেরিঘাটের মাঝামাঝি সাত্তার মেম্বারপাড়া এবং ১ নম্বর ফেরিঘাট থেকে ৪ নম্বর ফেরিঘাটের মাঝে সিদ্দিক কাজীরপাড়া গ্রাম এলাকায় ভাঙন চলছে। গ্রামের অনেকেই ঘরবাড়ি ভেঙে, গাছপালা কেটে ভিটামাটি ফেলে নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

দৌলতদিয়ায় বর্তমানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ৭ নম্বর ঘাট। এই এলাকা ভাঙলে ৭ নম্বর ঘাটটি বন্ধ হয়ে যাবে। আর এই ৭ নম্বর ঘাট বন্ধ হলে ফেরি চলাচলই বন্ধ হয়ে যাবে। তাই ঘাট রক্ষার জন্য হলেও এই ৬ ও ৭ নম্বরের মাঝামাঝি স্থানের ভাঙন রোধ অত্যন্ত জরুরি। 

বিজ্ঞাপন

দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় ও স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, আগে এই ইউনিয়ন এলাকায় মোট ২১টি মৌজা ছিল। এর মধ্যে বর্তমান উত্তর দৌলতদিয়া, দক্ষিণ দৌলতদিয়া, চর দৌলতদিয়া ও বাহিরচর দৌলতদিয়া-এই চারটি মৌজার অস্তিত্ব রয়েছে। ১৯৯৪ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গত ২৯ বছরে দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ২৪টি গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ফলে রাজবাড়ীর ঐতিহ্যবাহী দৌলতদিয়া ইউনিয়নের মানচিত্র ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে। এখন দৌলতদিয়া ঘাট ভেঙে মাত্র এক কিলোমিটার পশ্চিমে এসে মরা পদ্মা নামের একটি নদীর সাথে মিশে গেলেই দৌলতদিয়া ইউনিয়নটি সম্পূর্ণভাবে পদ্মায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।

বিআইডব্লিউটিএর আরিচা অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলাম জানান, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নদীবন্দর আধুনিকায়ন প্রকল্পের আওতায় নদীর তীর রক্ষায় দৌলতদিয়া প্রান্তে ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হবে। বাঁধটি নির্মাণ করা গেলে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট, লঞ্চঘাটসহ গোটা গোয়ালন্দ উপজেলা ভাঙনের হাত থেকে স্থায়ীভাবে রক্ষা পাবে।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, দৌলতদিয়ায় সাতটি ফেরিঘাটের মধ্যে তিনটি ঘাট বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে ১ ও ২ নম্বর ঘাট দুটি ২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর নদীভাঙনের কবলে পড়ে বিধ্বস্ত হয়। মেরামত না করায় ওই ঘাট দুটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। পরে ৫ নম্বর ফেরিঘাটটিও ভাঙনের কবলে পড়ে পদ্মায় হারিয়ে যায়। কয়েক দিন ধরে পদ্মায় পানি ও স্রোত বেড়ে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে দৌলতদিয়ায় চালু থাকা ৩, ৪, ৬ ও ৭ নম্বর ফেরিঘাট এখন ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এম এ শামীম বলেন, জেলায় পদ্মা নদীর ৫৭ কিলোমিটার তীর রয়েছে। এর মধ্যে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় ভাঙন দেখা দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বিআইডব্লিউটিএ। ঘাট ব্যতীত অন্য সব স্থানে কাজ করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এই বর্ষায় তাদের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে। 

 

 


  
 

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |